তীর্থ অর্থ কি - বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথাই
ভূমিকা
হিন্দু জনসংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ। ভারত ও নেপালের পর বাংলাদেশেই সর্বাধিক সংখ্যক সনাতন ধর্মের বসবাস। বিভিন্ন প্রতিকূলতার শর্তেও এখনো বাংলাদেশে মন্দির আশ্রম ও আখড়ার সংখ্যা এক লক্ষর ও বেশি। সনাতন পদ্ধতিতে তীর্থ অর্থ কি এবং বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথায় কোথায় তা নিয়ে আজকের আমার আর্টিকেল।
পোস্ট সূচিপত্রঃনমস্কার আমি শ্রী শুভ
কুমার প্রামানিক। আপনি যদি তীর্থ অর্থ কি এবং বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথাই খুজে
থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আশা করি আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন
তীর্থ অর্থ কি এবং বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথাই কোথাই জানতে হলে আমার আর্টিকেল
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ লেখা মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
তীর্থ অর্থ কি
প্রিয় পাঠক এখন আমরা যেই বিষয়ে জানবো তা হলো তীর্থ অর্থ কি। বিশেষ্য পদে বলা
হয়েছে স্নানের ঘাট, পবিত্র দেবস্থাল, তীরে অবস্থিত, পবিত্র সলিলা নদী সপ্ততীর্থ
গঙ্গোচ যমুনেচৈব ইত্যাদি। চলুন যেনে নেওয়া যাক বাংলা দিয়ে তীর্থ অর্থ কি,
তীর্থো বিশেষ পদে বলা হয়েছে পবিত্র স্থান, পাপমোচন, ঋষি সেবিত পবিত্র জল, নদী
সরোবর আবতরণ বা স্নানের ঘাট, গুরু, ইত্যাদি।
প্রাচীন যুজ থেকে আমাদের হিন্দু সমাজের মানুষ তীর্থ ধাম করে আসছেন। আগের যুগ
থেকে বিভিন্ন গুরু, বৈষ্ণব,মনি ঋষি দের থেকে জেনে আসা বা তাদের নিয়ম অনুসারে
মেনে তীর্থ ধাম করা হয়। ভগবান কোনো এক নিদিষ্ট স্থানে তার লিলা প্ররিবেশন
করেছিল বা কোনো এক জাইগাই জন্ম থেকে মৃতু বরণ করেছিলেন, তার পর থেকে সেখানে
তীর্থ ধাম শুরু হয়েছিলো।
মণি ঋষি, বৈষ্ণব দের মতে তীর্থ ধাম করলে পাপ মচোন হয়, মনের আশা পূন্য হয়, এ
ছাড়াও আনেক রকম ফল পাওয়া যায়। তীর্থ অর্থ বলতে বা তীর্থ ধাম সাধারণত নদ নদীতে
স্নান করা হয়, স্নান করার পর বৈষ্ণব দ্বারা মন্ত্র পাঠ করে দেহ পাপ মোচন করা হয়
তারপর মন্দির পরিক্রমা করা হয়। তার পর প্রসাধ গ্রহন করা হয়।
বাংলাদেশের তীর্থস্থান খেতুরী ধাম
এই স্থানটি বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানা প্রেমতুলি, খেতুরী
জায়গায় অবস্থিত। খেতুরী ধাম হচ্ছে বাংলাদেশের হিন্দুদের সবচাইতে বড়
তীর্থস্থান যেখানে প্রতিবছর 8 থেকে 10 লাখ মানুষের সমাগম ঘটে এই স্থানে।
বাংলাদেশের তীর্থস্থান খেতুরী ধাম সনাতন তথা হিন্দু ধর্মালম্বীদের সাধক শ্রী
শ্রী নরোত্তম দাস ঠাকুর মহাশয় কে কেন্দ্র করে এই ক্ষেত্রে থাম এর আয়োজন।
নরোত্তম দাস ঠাকুর ছিলেন একজন সাধক, পদাবলী কীর্তন বা লীলা রস ও কীর্তনের
প্রবতক। তিনি জন্মেছিলেন রাজশাহী জেলার গোপালপুর পরগনাই। তার জন্ম ১৫৩১
বঙ্গাব্দ মাঘী পূর্ণিমাতে। তার পিতা ছিলেন জমিদার কৃষ্ণনন্দ দাস এবং মাতা ছিলেন
নারায়নী দেবী। পিতার অগাধ সম্পত্তি থাকার পরেও তিনি সাধারণভাবে জীবন যাপন
করতেন বিন্দুমাত্র লোভ ছিল না সম্পত্তির প্রতি।
ধর্মীয় জ্ঞান লাভের জন্য মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি তার বাবার অগাধ সম্পত্তির
মায়া ত্যাগ করে চলে যান ভারতের বৃন্দাবনে। সেখানে গিয়ে লোকনাথ গোস্বামীর নিকট
দীক্ষা লাভ করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন ধর্ম প্রণয়ন সংসার বৈরাগী এবং
উদাসীন প্রকৃতির। ১৬১১ সালে তিনি পরলোক গমন করেন এই খেতুরী ধাম থেকে।
শ্রী শ্রী নরোত্তম দাস ঠাকুর মহাশয় কে স্মরণ করতে গোদাগাড়ীর ঐতিহ্যবাহী প্রেম
তুলি খেতুরী ধাম তথা গৌরাঙ্গ বাড়িতে পালিত হয় তিরোভাগ তিথি। লক্ষী পূজার
কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী পঞ্চমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় এই তিরোপথ তিথি। ধামের এই অংশে
নারায়ণ মন্দির, গৌরাঙ্গ দেব মন্দির, শিব মন্দির, আসুন বেটি মন্দির, এবং
জগন্নাথ মন্দির রয়েছে।
এছাড়াও খেতরী ধাম কে ঘিরে শ্রী শ্রী নরোত্তম দাস ঠাকুর মহাশয় অনেক মন্দির
রয়েছে। গৌরাঙ্গ বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরে ভজন তলি যেখানে বসে তিনি ধ্যান
এবং কীর্তন করতেন। ভজন তলি থেকে সামান্য দূরে দন্ততলীর অবস্থান, কখনো কখনো
কীর্তন করতে করতে রাত থেকে ভোর হয়ে যেত। নিজ গৃহে যাওয়ার পূর্বে এখানে তিনি
দাঁত মাজতেন।
তারপর সামান্য দূরে আমরাতলির অবস্থান, লোকমুখে প্রচলিত ঠাকুরের আম এবং ইলিশ
খাওয়ার ইচ্ছে হলে তেঁতুল গাছ থেকে পেয়েছিলেন আম এবং পুকুর থেকে পেয়েছিলেন
ইলিশ। খেতরী ধাম থেকে ২ কিলোমিটার দূরে তমালতলির অবস্থান। সেখানে রয়েছে দুটি
স্থান যা তীর্থে আসার প্রার্থনা বা ভক্তির স্থান বলে বিবেচিত হয়।
গঙ্গাস স্নান এবং ৭০০ বছরের পুরনো তমাল বৃক্ষ। বাংলাদেশের তীর্থস্থান
কোথাই পরিশেষে বলা যায় বাংলাদেশের তীর্থস্থান খেতুরী ধাম বাংলাদেশের মধ্যে
অন্যতম তীর্থস্থান।
বাংলাদেশের তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ মন্দির সীতাকুণ্ড
প্রতিবছর শিবচতুর্দশী মেলা উপলক্ষে শিবরাত্রি ব্রত তো পালন ও শিবলিঙ্গের অর্ঘ্য
নিবেদন করতে দেশ-বিদেশ থেকে লাখো হিন্দু পুরোনাথে জ্বর হন সেই বাংলাদেশের
তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ মন্দির সীতাকুণ্ড মন্দিরে। সীতাকুণ্ডকে মন্দিরের
জনপদ বলা হয়। একের পর এক এই মন্দির আকর্ষণ করে। এই জন্য বাংলাদেশের তীর্থস্থান
চন্দ্রনাথ মন্দির সীতাকুণ্ড তীর্থ ধাম মন্দির।
জায়গাটি চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সীতাকুণ্ড উপজেলায়
অবস্থান। চট্টগ্রাম ঢাকা মহাসড়কের সামান্য উত্তর পাশে এই শহরটি। সীতাকুণ্ডকে
মন্দিরের জনপদ বলা হয়। এই মন্দিরে যাওয়ার পথে পাবেন অনেক রকমের মন্দির যা
ভক্তদের মূল আকর্ষণও বলা যায় আবার ভক্তদের মনে ধর্মের পথে আকর্ষণ করে।
বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথাই, পরিশেষে বলা যায় বাংলাদেশের তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ
মন্দির সীতাকুণ্ড তীর্থ ধাম করার জন্য ভক্তদের মনে এক অন্ন রকম ভক্তি অনুবভ
করে।
বাংলাদেশের তীর্থস্থান মা ভবানী মন্দির
উপমহাদেশে হিন্দু ধর্মলম্বীদের ৫১ টি পিটিস্থানের মধ্যে অন্যতম বগুড়া শেরপুর
উপজেলার মা ভবানীর মন্দির এই মন্দির কে বাংলাদেশের তীর্থস্থান মা ভবানী মন্দির
ও বলা হয়। প্রতি বছর লাখ লাখ পুরাত্রী আসেন এই মন্দিরে তীর্থস্থান করতে।
বিশেষ করে মাঘূ পূর্ণিমা ও রাম নবমী উৎসব ঘিরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল,
ভুটান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও শ্রীলংকা থেকে অনেক পুরন্থীদের আগমন ঘটে এই মা
ভবানী মন্দিরে। বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথাই, পরিশেষে বলা যাই বাংলাদেশের
তীর্থস্থান মা ভবানী মন্দির তীর্থ ধাম করার জন্য বেশ জনপ্রিয়।
বাংলাদেশের তীর্থস্থান ঢাকেশ্বরী মন্দির
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত একটি বৃহৎ হিন্দু মন্দির। অনেকেই মনে করে
ঢাকার নামকরণ করা হয়েছে এই ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নাম থেকে। সেন রাজবংশের রাজা
বল্লব সেন খ্রিস্টীয় ১২ শো শতাব্দীতে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত করেন তার পর থেকে
বাংলাদেশের তীর্থস্থান ঢাকেশ্বরী মন্দির তীর্থ ধাম করার জন্য গড়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথাই এই মন্দিরটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
সলিমুল্লাহ হলের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্রাবাসের এলাকার দক্ষিণে এই ঢাকেশ্বরী মন্দির অবস্থিত। প্রতিদিন হাজার হাজার
নাতি আসেন এই মন্দির দর্শন করতে এই জন্য এই মন্দিরকে বাংলাদেশের তীর্থস্থান
ঢাকেশ্বরী মন্দির বলা হয়।
বাংলাদেশের তীর্থস্থান শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম
সোনারগাঁ উপজেলার বারদী বাজারের পশ্চিম উত্তর কোনার দিকে বাংলাদেশের তীর্থস্থান
শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম আবস্থিত। ঘুরে আসতে পারেন ১২ দিন প্রতিবছর
১৯শে জ্যৈষ্ঠ এখানে সপ্তাহব্যাপী মেলা বসে। ১২৫৭ সালের এই দিনে পরম পুরুষ শ্রী
শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী মৃত্যুবরণ করেন।
তার এই মহাকাল প্রণয়ের দিনটিকে ভক্তি শ্রদ্ধা মধ্যে দিয়ে স্মরণ করার জন্য এই
মেলার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথাই, প্রতিবছর হাজার হাজার
পুরন্থীদের আগমন ঘটে এই জন্য বাংলাদেশের তীর্থস্থান শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী
আশ্রম বলে মনে করা হয়।
শেষ কথা
বন্ধুগণ, থাকি। শেষ কথা ই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল তীর্থ অর্থ কি -
বাংলাদেশের তীর্থস্থান কোথাই সম্পর্কে সমস্ত তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে
সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোন কিছু বুঝতে না পারলে বা কোন তথ্য জানার থাকলে
আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই
আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর
কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
শেষ কথা আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে
দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে তীর্থ অর্থ কি - বাংলাদেশের
তীর্থস্থান কোথাই এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন
এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।
ছেলেদের কাম শক্তি বৃদ্ধির ঔষধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত টি এই আর্টিকেলটি যদি
আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিবার আপনার বন্ধুবান্ধব আপনার
আত্মীয়-স্বজনদের কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url