তুলসী আরতি জলদান মন্ত্র প্রণাম মন্ত্র তুলসী সম্পর্কে A2z বিস্তারিত

ভূমিকা

মন্দির প্রাঙ্গণে ও গৃহান্গুনে পবিত্র তুলসী বৃক্ষ রাখা, তার পূজা পরিক্রমা করা, কন্ঠে তুলসী কাঠের মালা ধারণ করা সনাতন হিন্দুদের প্রাচীন সংস্কৃতি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত তুলসী জলদান মন্ত্র, তুলসী আরতি, তুলসী প্রণাম মন্ত্র, তুলসী আরতি কীর্তন তুলসী সম্পর্কে সফল তথ্য এই আর্টিকেলে তুলে ধরা হয়েছে।
তুলসী আরতি জলদান মন্ত্র প্রণাম মন্ত্র তুলসী সম্পর্কে A2z বিস্তারিত

পোস্ট সূচিপত্রঃনমস্কার আমি শ্রী শুভ কুমার প্রতিদিনের মতো আজকেও আরেকটি নতুন ব্লগ আর্টিকেল নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে। আপনি যদি তুলসী সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে করুন আশা করি তুলসী মন্ত্র সম্পর্কে সকল সঠিক এবং নির্ভুল তথ্য পাবেন

তুলসী জলদান মন্ত্র

প্রিয় পাঠক এখন আমরা আলোচনা করব তুলসী জলদান মন্ত্র বা তুলসী মহারানী কে কিভাবে জল দিতে হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী আচার্য জগদীশ বসু বলেছেন তিনি বলেছেন গাছেরও প্রাণ আছে। ছাত্র অনুযায়ী আচার্য জগদীশ বসু আরও কিছু বলেছেন তা হল প্রতিটা জীবের ৮৪ লক্ষ্য প্রকাশ জীবের প্রাণ রয়েছে, তার মাঝে প্রত্যেকটা বৃক্ষের ও প্রাণ রয়েছে।

সমস্ত বৃক্ষের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই তুলসী মহারানী। তুলসী মহারানী কে প্রতিনিয়ত জল দান করতে হয়। বিশেষ করে বৈশাখ মাসে তুলসী দেবীকে কিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয় এবং তুলসী মহারানী কে জলের ধারা শ্রবণ করতে হয়। কিন্তু তার সাথে সাথে আরেকটি বৃদ্ধি রয়েছে প্রতিনিয়ত তুলসী মহারানী কে কিভাবে জল অর্পণ করতে হয়।

এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, তুলসী জলদান মন্ত্র সকলেই মুখস্ত এবং ঠোটস্ত করবেন তার পাশাপাশি প্রতিদিন এই মন্ত্র জপ করে তুলসী বেবিকে জল দিবেন।

তুলসী জলদান মন্ত্র

(ওঁ) গোবিন্দবল-ভাং দেবীং ভক্তচৈতন্যকারিণীম্‌।

স্নাপয়ামি জগদ্ধাত্রীং কৃষ্ণভক্তি প্রদায়িনীম্‌ ৷৷

তুলসী জলদান মন্ত্র এর বাংলা অর্থ।

আমি সেই গোবিন্দবল্লভাম্‌ দেবীকে জল অর্পন করি এবং সেই জগৎ মাতাকে স্নান করাই, যিনি ভক্তেদের চৈতন্য জাগিয়ে তুলেন এবং তাকে কৃষ্ণ ভক্তি প্রদান করেন।

অধিক গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রটি পড়বেন এবং ৩ বার তুলসী মহারানীর বৃক্ষের জল দেওয়ার চেষ্টা করবেন। সকলের প্রতিদিন তুলসী মহারানীকে স্পর্শ করবেন এবং বৃক্ষের গোড়ায় মাটি দিবেন। তুলসী মহারানী এতটাই শুদ্ধ যে তুলসী মহারানীকে স্পর্শ করার ফলে আমাদের সমস্ত অসচ্চতা কেটে যায়। অশুদ্ধ শরীরে তুলসী মহারানী কে স্পর্শ করা যাবে না।

তুলসী আরতি

প্রিয় পাঠক এখন আমরা যেই বিষয়ে জানব তুলসী আরতি নিয়ে।

প্রাতঃকালে মঙ্গলারচিত পরে ( সন্ধ্যাকালে সন্ধ্যারতির আগে) সমবেত সকল ভক্তমন্ডলী অবশ্যই তুলসী বন্দনা করবেন এবং তুলসী দেবীকে প্রদক্ষিণ করবেন প্রথমে তিনবার তুলসী মন প্রণাম মন্ত্র উচ্চারণ সহকারে প্রণাম নিবেদন করতে হয়। প্রিয় পাঠক তুলসী আরতি সম্পর্কে পুরো বিষয় জানতে হলে তুলসী প্রণাম মন্ত্র পড়ুন

তুলসী প্রণাম মন্ত্র

প্রিয় পাঠক এখন আমরা আলোচনা করব তুলসী আরতি করার ক্ষেত্রে প্রথমে তুলসী প্রণাম মন্ত্র পাঠ করতে হয়। তুলসী প্রণাম মন্ত্র কি বা কেমন করে করতে হয় জানতে হলে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

তুলসী প্রণাম মন্ত্র

(ওঁ) বৃন্দায়ৈ তুলসী দেব্যৈ প্রিয়ায়ৈ কেশবস্য চ।

বিষ্ণুভক্তি প্রদে দেবী সত্যবত্যৈ নমো নমোঃ ৷৷

তারপর ভক্তবৃন্দ তুলসী আরতী কীর্তন করেন, তখন পূজারী ধুপ, ঘৃত প্রদীপ ও পুষ্পার্ঘ্য সহকারে তুলসী দেবীর উদ্দেশ্যে আরতি নিবেদন করেন। আরতী উপকরণাদি নিবেদনের সময়ে পূজারী একটি আসনের উপরে দাঁড়িয়ে বাম হস্তে ঘন্টা বাজিয়ে আরতী উপকরণাদি তুলসী দেবীকে নিবেদন করবেন

প্রতিটি উপকরণ তুলসী দেবীকে নিবেদনের পরে সমবেত ভক্তদের উদ্দেশ্যে চত্রাকারে তিনবার ঘুরিয়ে নিবেদন করবেন। তুলসী আরতীর কীর্তন শেষ হয়ে গেলে, সামবেত ভক্ত মন্ডলী অন্ততঃ তিনবার অথবা চারবার তুলসী দেবীকে প্রদক্ষিণ করবেন।


প্রিয় পাঠক এই ছিল তুলসী প্রণাম মন্ত্র সকল কার্যকলাপ। এতক্ষণ আপনারা তুলসী আরতি করার সম্পর্কে তুলসী প্রণাম মন্ত্র জানলেন এখন আপনার যে বিষয়ে জানবেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তুলসী আরতি কীর্তন সম্পর্কে।

তুলসী আরতি কীর্তন

নমো নমঃ তুলসী! কৃষ্ণ প্রেয়সী।

রাধাকৃষ্ণ-সেবা পাব এই আভিলাষী ৷৷

যে তোমার চরণ লয়, তার বাঞ্ছা পূর্ণ হয়,

কৃপা করি কর তারে বৃন্দাবন বাসী।

মোর এই অভিলাষ, বিলাষ-কুঞ্জে দিও বাস,

নয়নে হেরির সদা যুগলরূপরাশি ৷৷

এই নিবেদন ধরে, সুখীর অনুগত করে,

সেবা-অধিকার দিয়ে কার নিজ দাসী।

দীন কৃষ্ণদাসে কয়, এই যেন মোর হয়,

শ্রীরাধাগোবিন্দ প্রেমে সদা যেন ভাসি ৷৷

প্রিয় পাঠক এই ছিল তুলসী আরতি কীর্তন এখন আপনারা যে বিষয়ে জানবেন তা হল তুলসী প্রদক্ষিণ মন্ত্র।

তুলসী প্রদক্ষিণ মন্ত্র

প্রিয় পাঠক চলুন জেনে নেওয়া যাক তুলসী প্রদক্ষিণ মন্ত্র।

যানি কানি চ পাপানি ব্রহ্মহত্যাদিকানি চ।

তানি তানি প্রণশ্যন্তি প্রদক্ষিণ পদে পদে ৷৷

তুলসী প্রদক্ষিণ মন্ত্র এর বাংলা অর্থ

যখন মানুষ শ্রীমতি তুলসী দেবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকে, তখন প্রতি পদক্ষেপে তার কৃত সরল পাপকর্ম, এমন কি ব্রহ্মহত্যার পাপও বিনষ্ট হয়ে যায়। তারপরে বাঁ হাতে পঞ্চপাত্র ধারণ করে তা থেকে ডান হাতে দিয়ে শ্রীমতি তুলসী দেবীকে জল সিঞ্চন করতে হয়।

তুলসী চয়ন মন্ত্র

প্রিয় পাঠক এখন আমরা যেই বিষয়ে জানব তা হল তুলসী চয়ন মন্ত্রঃ সম্পর্কে।

(ওঁ) তুলস্যমৃতজন্মাসি সদা ত্বং কেশবপ্রিয়া।

কেশবার্থে চিনোমি ত্বাং বরদা ভব শোভনে ৷৷

তুলসী চয়ন মন্ত্র এর বাংলা অর্থ।

হে তুলসী, অমৃত থেকে আপনার জন্ম। আপনি নিয়ত ভগবান শ্রী কেশবের অতীব প্রিয়। এখন শ্রীকেশবের পূজার উদ্দেশ্য আপনার পত্র ও মঞ্জরী আমি সংগ্রহ করছি কৃপা করে আমাকে বরদান করুন।

ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র

চয়নোদ্ভবদুঃখং চ যদ্‌ হৃদি তব বর্ততে।

তৎ ক্ষমস্ব জগন্মাতঃ বৃন্দাদেরী নমোহস্ততে ৷৷

প্রিয় পাঠক, চলুন ক্ষমা প্রার্থনা মন্ত্র এর বাংলা অর্থ জেনে নিন।

হে তুলসী দেবী আপনাকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি জানাই। হে জগন্মাতা, আপনার পাত্র ও মঞ্জরী চয়ন কালে যদি আপনার হৃদয়ে দুঃখের উদ্ভব করে থাকি, তবে কৃপা করে আমাকে ক্ষমা করুন।

তুলসী সম্পর্কে বিধি নিষেধ

সকালে সূর্যোদয়ের আগে কিংবা সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের পরে, এবং দ্বাদশী তিথিতে কখনও তুলসী পত্র চয়ন করতে নেই অর্থাৎ তুলসী পাতা তুলতে নেই। আগের কিংবা সকালে তোলা তুলসী পত্র শুকিয়ে গেলেও, তা শ্রীবিগ্রহ অর্চ্চনায় ব্যবহার করা চলে।

সকল ভক্তের উচিৎ কয়েকটি তুলসী গাছ রাখা। তবে খুব সতর্কতার সাথে এগুলোর যত্ন করতে হবে। কারণ তুলসী কৃষ্ণ প্রিয়সী। তুলসী গাছ গুলো এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে মানুষ অথবা পশু তার ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে না পারে, তাকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে না পারে।

মঞ্জরী গুলো কচি সময় হাত দিয়ে ( নখ দিয়ে নয়) ভেঙে দিলে গাছটি অত্যন্ত অসুস্থ ও ছোবল ভাবে বেড়ে উঠবে। শ্রীমতি তুলসী দেবীর যাতে কোন প্রকার ব্যথা সৃষ্টি না হয়, সেই বিষয়ে বিশেষ যত্নবান হতে হয়। ডান হাত দিয়ে তার পাত্র চয়নের সময়ে বাম হাত দিয়ে শাখাটিকে ধরে রাখতে হয় যাতে সেটি ভেঙে না যায়। তুলসী পত্র চয়নের শেষে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়।

শুধুমাত্র বিষ্ণু তত্ত্ব বিগ্রহ সমূহ ও চিত্র পাট সমূহের প্রতি তুলসী চরণে নিবেদন করা যায়। এমনকি রাধা রানী, গুরু অথবা বৈষ্ণবের চরণে তুলসী নিবেদন করা যায় না। ভগবান কে ভোগ নিবেদনের সময় প্রত্যেক সামগ্রীতে একটি করে তুলসী পাতা বা মঞ্জরী দিতে হয়।

শেষ কথা

বন্ধুগণ, থাকি। শেষ কথা ই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল তুলসী আরতি জলদান মন্ত্র প্রণাম মন্ত্র তুলসী সম্পর্কে A2z বিস্তারিত সম্পর্কে সমস্ত তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোন কিছু বুঝতে না পারলে বা কোন তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।

অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

শেষ কথা আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে তুলসী আরতি জলদান মন্ত্র প্রণাম মন্ত্র তুলসী সম্পর্কে A2z বিস্তারিত এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।

ছেলেদের কাম শক্তি বৃদ্ধির ঔষধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত টি এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিবার আপনার বন্ধুবান্ধব আপনার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url