রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা আলুর রসের অপকারিতা উপকারিতা ফেসপ্যাক

আলু বহু প্রচলিত উদ্ভিজ্জ খাদ্য। এটি কন্দ জাতীয় ( tuber ) এক প্রকারের সবজি, যা মাটির নিচে জন্মে। এর আইডি উচ্চ জন্ম দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ, সেখান থেকে ১৬ শ শতকে এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। উচ্চ পুষ্টিমান এবং সহজে ফলানো ও সংরক্ষণ করা যায় বলে এটি বিশেষ সর্বাপেক্ষা প্রচলিত সবজিগুলো মধ্যে অন্যতম।

প্রিয় পাঠক আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লক আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত, রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা, আলুর রসের অপকারিতা, আলুর রসের ফেসপ্যাক, আলুর রস চুলে দিলে কি হয় এই সম্পর্কে যদি আপনি গুগলে খুঁজে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।

আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য এবং মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন আশা করি সীমা আইটি ওয়েবসাইটে সকল সঠিক তথ্য খুঁজে পাবেন।

আলু যে শুধু ভর্তা ভাজি কিংবা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়ার জন্য তা কিন্তু নয়। রূপচর্চায় কার্যকরী এই পুষ্টিকর সবজিটি। ত্বক ও চুলের যত্নে আলু খুব ভালো কাজ করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা সম্পর্কে।

• চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে আলুর রস করে সেই রস তুলাই ভিজিয়ে নিয়ে চোখের নিচে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে চোখের নিচে কালো দাগ দূর হবে।
• ত্বকের কালো দাগ দূর করতে ত্বকের যেখানে কালো দাগ, সেখানটায় আলুর রসের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে কালো দাগ চলে যাবে।
• ত্বক সজীব রাখতে আলুর রসে তুলা ভিজিয়ে রেখে সেই তুলা মুখ ও চোখে কিছুক্ষণ ঘোষার  পড়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে টক সজীব এবং চোখের ক্লান্তি ভাব দূর হবে।
• বলিরেখা দূর করতে আলুর রসের সঙ্গে অলিভ ওয়েল মিশিয়ে চোখের নিচে ও কোনায় প্রতিদিন পাঁচ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। শুকানোর পর ধুয়ে ফেলুন।
• ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে আলুর রস ও শসার রস একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। চোখের ফোলা ভাব কমাতে তুলার বল ভিজিয়ে চোখের উপর দিয়ে রাখুন।
• ত্বকের শুষ্কতা কমাতে শুষ্ক ত্বককে অনেক সময় লোশন বা মইয়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেও শুষ্কতা কমানো যায় না। এক্ষেত্রে প্রতিদিন এক গ্লাস আলুর রস পান করতে পারেন। আলু রস ত্বকের শুষ্কতা কমায়।
• মেসতার ও ব্রণ এর দাগ দূর করতে আলুর রস, গোলাপ জল, গ্লিসারিন, চালের গুঁড়ো এইগুলো উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে।

প্রিয় পাঠক এই ছিল রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা, ভালো লেগে থাকলে পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করবেন।

আলুর রসের অপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

সবুজ আলু শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই সবুজ আলুর ব্যবহার না করাই ভালো। আলুতে রয়েছে, স্লেলিন, চাকুনিন এবং আর্সেনিক থাকে। এই রাসায়নিকের অতিরিক্ত গ্রহণ বা রূপ চর্চা করলে খুব মারাত্মক হতে পারে। নষ্ট বা পচা আলুর রস ব্যবহার করা উচিত নয় এতে শরীরের বিষাক্ত প্রভাব ফেলতে পারে।

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কাঁচা আলু বা বা আলুর রস ক্ষতিকর। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ভাজা আলু নিরাপদ। আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৮০ এর উপরে। খুব বেশি, তাই যাদের স্থুলকায়, বা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, অথবা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে আলোর রস ও আলু ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

আলু ও ও আলুর রসে উপস্থিত শর্করার ব্যবহারে ভারসাম্যহীনতা খুদা হ্রাস, ডায়াবেটিস সংক্রমণ বৃদ্ধি করে। আলু খেলে যাদের অ্যালার্জি হয় তাদের ক্ষেত্রে ত্বকে আলুর রস ব্যবহারের ফলে বা খাওয়ার ফলে এলার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

আলু বা আলুর রস খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে থাকে। প্রিয় পাঠক এই ছিল আলুর রসের অপকারিতা। ভালো লেগে থাকলে অথবা কোনো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানিয়ে দেবেন।

বন্ধুগণ, রান্নাঘরে আলু থাকে না এমনটা কখনোই হয় না। আলু খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া যায় না। এটি মাছ-মাংস সবকিছুর সঙ্গে সঙ্গ দেয়। আজকে আমি আপনাদের আলুর রসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানোর চেষ্টা করব। কথা না বাড়িয়ে জেনে নেয়া যাক আলুর রসের উপকারিতা সম্পর্কে।

• বন্ধুগণ কাঁচা আলু রসের রয়েছে প্রাইট্রা কেমিক্যাল, ভিটামিন সি, খনিজ পদার্থ যেমন পটাশিয়াম, আইরণ, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, তামা ইত্যাদি।
• আলুর রসের ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে সংক্রমণ, সর্দি, কাশির সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে, পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
• শরীরে ডিটস্কফাইন এজেন্ট হিসেবে আলুর রস কাজ করে, পাশাপাশি লিভার এর কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
• যাদের আর্থ্রাইটিস, বাত জড়িত কারণে হাত পা ব্যথা করে তাদের ক্ষেত্রে আলুর রস ভীষণ উপকারী।
• আলুর রসে ন্যাচারাল কার্বোহাইড্রট থাকার কারণে শরীরে শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
• আলুর রসে থাকা পটাশিয়াম কিডনির কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
• আলুর রস আমাদের ভয়াবহ রোগ থেকে দূর করে যাবতিয় ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রিক আলসার, হাইপারটেনশন ইত্যাদি।
• ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আলুর রস ও সমপরিমাণ জল একসঙ্গে মিশিয়ে সকাল বেলা খালি পেটে নিয়মিত খাওয়ার ফলে ওজন কম থাকবে।
• আপনার যদি অতিরিক্ত গরম লেগে থাকে তাহলে কাঁচা আলু বা আলুর রস এর জুস বানিয়ে খান, খুব তাড়াতাড়ি শরীর ঠান্ডা ও শীতল হয়ে যাবে।
• চুলের নানান রকম সমস্যা দূর করতে আলুর রস ব্যবহার করতে পারেন। আলুর রস মধু, পাতিলেবু, দই একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহারের ফলে নতুন চুল গজাতে শুরু করবে এবং চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
• ত্বকের নানান রকম সমস্যার সমাধান করে আলুর রস। আলুর রস চাউলের গুড়ো বা বেসন এর গুড়ো, মধু, লেবু, শশা দিয়ে ক্রিম বানিয়ে ত্বকে এপ্লাই করুন, ১৫ থেকে ২০ দিন এপ্লাই করার পর দেখবেন ত্বকের অনেকটা পরিবর্তন এসে গিয়েছে।

প্রিয় পাঠক এই ছিল আলুর রসের উপকারিতা ভাল লেগে থাকলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করবেন।

আলুর রসের ফেসপ্যাক তৈরি করার ক্ষেত্রে যে সকল উপকরণের প্রয়োজন হয় তার নিচে উল্লেখ করা হলো।

আলুর রস হালকা পরিমাণে ও লেবুর রস, সাদা ভুট্টার গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে নিলে একটি ফেসপ্যাক তৈরি হয়ে যাবে । এই ফেসপ্যাক ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বকের যে কোনো ধরনের কালো দাগ দূর হয়ে যায়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে উপরের উপকরণের সাথে টক দই অথবা ভেড়ার দুধ মিশাতে পারেন।

আলুর রস, অ্যালোভেরা জেল, গ্লিসারিন, ভিটামিন ই ক্যাপসুল একসঙ্গে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে পটাটো জেল। এই পটাটু জেল ত্বকে ব্যবহারের ফলে তক হবে উজ্জ্বল ও নরম কোমল পাশাপাশি ত্বকের অয়েলি ভাব দূর হবে।

আলুর রস, মুলতানি মাটি, চাউলের গুঁড়ো, টক দই, গ্লিসারিন একসঙ্গে ভালোভাবে গারো করে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে একটি ফেসপ্যাক। এই ফেসপ্যাক ব্যবহারের ফলে ত্বকের মেস্তা দাগ, চোখের নিচে কালো হওয়া, চোখের নিচে ভাস পড়ে যাওয়া, পিম্পলস এর দাগ, রোদে ত্বক ফুরিয়ে যাওয়া, ত্বকের বয়স থামিয়ে দিবে, ত্বক হবে ফর্সা ও উজ্জ্বল।

প্রিয় পাঠক এইভাবে আলুর রসের ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করবেন, আশা করি বেশ দারুণ ফলাফল পাবেন।

আলুর রস চুলে দিলে কি হয় জানতে হলে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। অতিরিক্ত গরমের জন্য চুলের গোড়ায় ময়লা, চুলে খুশির সমস্যা, চুল তেল চিটচিটে ভাব, চুল ড্যামেজ হয়ে যাওয়া, চুল পরা, চুলে জট পড়ে যাওয়া, চুল কালো করা, চুল ঝলমলে ও চুল বৃদ্ধি করতে এইগুলো সমস্যার সমাধান করতে আলুর রস চুলে ব্যবহার করুন।

প্রিয় পাঠক চুলের নানান রকমের সমস্যা সমাধান করতে আলুর রস দিয়ে ফেসপ্যাক কেমন করে তৈরি করবেন নিচে বিস্তারিত জানানো হলো। আলুর খোসা সহকারে ব্লেন্ডারের সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিয়ে আলুর তরল জল বের করে নেবেন, তার সঙ্গে যোগ করবেন অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে একটি চুলের ফেসপ্যাক।

অথবা, খোসা সহকারে আলু কুচি কুচি করে কেটে পরিমাণ মতো জল দিয়ে মিডিয়াম তাপ পাঁচ থেকে সাত মিনিট জল ফুটিয়ে নিন, এর সঙ্গে যোগ করতে পারেন ডিমের কুসুম একসঙ্গে ভালোভাবে মিশ্রণ করেলে তৈরি হয়ে যাবে চুলের ফেসপ্যাক। প্রিয় পাঠক, আলুর রস চুলে দিলে কি হয় বা কেমন করে ব্যবহার করবেন আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা আলুর রসের অপকারিতা উপকারিতা ফেসপ্যাক এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।

অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা আলুর রসের অপকারিতা উপকারিতা ফেসপ্যাক এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।

রূপচর্চায় আলুর উপকারিতা আলুর রসের অপকারিতা উপকারিতা ফেসপ্যাক এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার পরিবার আপনার বন্ধুবান্ধব আপনার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।