কিসমিস খেলে কি ওজন কমে ক্ষতিকর দিক উপকারিতা

ভূমিকা

কিসমিস আঙ্গুর ফল দিয়ে তৈরি করা হয়। আঙ্গুর ফল রোদে শুকিয়ে অথবা মাইক্রো ওভেনে শুকিয়ে কিসমিস তৈরি করা হয়। এই ফলটিকে বলা যায় শুকনো ফলের রাজা। কারণ এই ফলের বহু গুনাগুন, কিসমিস খেলে কি ওজন কমে ক্ষতিকর দিক উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
কিসমিস খেলে কি ওজন কমে ক্ষতিকর দিক উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লগ আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত কিসমিস খেলে কি ওজন কমে, কিসমিসের ক্ষতিকর দিক, কিসমিস এর উপকারিতা ও রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় জানতে হলে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

কিসমিস খেলে কি ওজন কমে

কিসমিস খেলে ওজন বাড়ে না কমে তা নিয়ে অনেকেই দ্বিধা গ্রস্থের মধ্যে থাকে। কিসমিস একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার কিন্তু এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে। তাই অনেকেই মনে করে কিসমিস খেলে ওজন বাড়তে পারে। কিসমিস খেলে ওজন বাড়ে কিনা তা নির্ভর করে কতটুকু এবং কিভাবে খাচ্ছেন তার ওপর।

যদি আপনি কিসমিস অতিরিক্ত মাত্রায় খেয়ে থাকেন তাহলে একটি আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। কারণ কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে, প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসে প্রায় ২০০ গ্রাম ক্যালরি রয়েছে। তাই যদি আপনি প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ গ্রাম কিসমিস খান তাহলে আপনার ১০০০ থেকে ১৪০০ ক্যালোরি খাওয়ার সমান, ফলে ওজন বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে।

কিসমিস খেলে কি ওজন কমে হ্যাঁ যদি আপনি নিয়ম মত খান তাহলে ওজন কমে। কেমন করে খাবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে ৫ গ্রাম কিসমিস ভিজিয়ে রাখবেন। সকাল বেলা এই কিসমিস গুলি পানি থেকে তুলে পানি একটু গরম করে চায়ের মতো আস্তে খাবেন। যদি মনে করেন পানি থেকে তোলা কিসমিস কি করবেন?

পানি থেকে তোলা কিসমিস জুস করে খেতে পারেন। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে শুধু কিসমিস খেলেই হবে না পাশাপাশি চর্বিযুক্ত খাবার এবং বেশি প্রোটিন যুক্ত খাবার অর্থাৎ যেগুলো খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি পায় সেগুলো খাবার কম খেতে হবে তাহলে দ্রুত ওজন কমতে শুরু করবে।

তবে কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, ফাইবার আপনাকে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং খিদে কম লাগে ফলে আপনার ওজন বৃদ্ধি হবে না। প্রিয় পাঠক কিসমিস খেলে কি ওজন কমে এই সম্পর্কে আশা করি আপনারা অনেকটাই ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।

কিসমিসের ক্ষতিকর দিক

আমি সব সময় বলে থাকি যে অতিরিক্ত যে কোনো খাবার খাওয়া আমাদের শরীরের পক্ষে হতে পারে ক্ষতিকারক, তেমনি অতিরিক্ত কিসমিস খেলে আমাদের শরীরের পক্ষে হতে পারে নানান রকমের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। চলুন কিসমিসের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

  • প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টি কিসমিস খেতে পারেন, অর্থাৎ ৩০ থেকে ৪০ গ্রাম। কিন্তু নিয়মিত এর থেকে বেশি কিসমিস খেলে শরীরের হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে, আর এই ফাইবার দেহের সিস্টেম থেকে অতিরিক্ত তরল শোষণ করতে পারে।
  • কিসমিসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরে অতিরিক্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রবেশ করলে শরীরের কোষ দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি পাই। কিসমিসে ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকে, ক্যালোরি ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন ডেকে আনার সমান। কিসমিসে আছে প্রচুর মাত্রায় শর্করা এবং ক্যালরি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মোটেও ভালো না।
  • অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত কিসমিস খেলে দাঁত ক্ষয় হয়।
  • অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়ার ফলে রক্তে কোলেস্টরেল এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
প্রিয় বন্ধুগণ এই ছিল কিসমিসের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করবেন।

কিসমিস এর উপকারিতা

গবেষকরা বলেছেন সোনালী বাদামী রং এর চুপচানো ভাজ হওয়া এই ফলটি মানব শরীরের জন্য খুবই উপকারী। বলছি কিসমিস এর কথা, অনেকেই কিসমিস খান কিন্তু কিসমিস এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। কিসমিস এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
  • কিসমিস খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং ব্রেন এর বিকাশ ঘটায়।
  • কিসমিসে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরে শক্তি যোগান দিতে সাহায্য করে।
  • কিসমিসে ফাইটো নিউট্রিয়ান্স, যা কাজ করে জ্বর ও ঠান্ডা জনিত রোগ নিয়ন্ত্রণে।
  • রক্তস্বল্পতা কমাতেও কাজ করে কিসমিস। এতে থাকা আইরন হিমোগ্লোশিন এর মাত্রা বাড়িয়ে কাজ করে অ্যানিমিয়া নিয়ন্ত্রণে।
  • হৃদপিণ্ড ভালো রেখে, কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণে রাখে পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • কিসমিসে ফাইবার থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, এছাড়াও এসিডিটি ও পেট ফাঁপা জনিত রোগেও কাজ করে।
  • দাঁতের ক্ষয় ও ভঙ্গুর হতে থাকা রক্ষা করে কিসমিস।

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আপনারা কিসমিস এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেন। নিচে রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে জানবেন।

রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয়

যাদের নিয়মিত এসিডিটির সমস্যা থাকে বা ঘুম হয় না তাদের জন্য রাতে কিসমিস খাওয়া খুবই উপকারী। ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে ফলেট এর পরিমান বারায় যা ঘুমের গুঙত মান উন্নত করে এবং স্নায়ু সাস্থকে বাড়িয়ে তুলে।

যিনারা সকালে ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে শরীরে ব্যথা অনুভব করেন তাদের পক্ষে ঘুমানোর আগে কয়েকদনা কিসমিস খাওয়ার ফলে শরীরের ব্যথা উপশম ঘটবে। রাতে কিসমিস খাওয়ার ফলে অন্ত্রের আন্দোলন করতে সাহায্য করে ফলে পেটে থাকা দূষিত পদার্থ মল এর সাহায্যে বেরিয়ে যায়। কিসমিস খাওয়ার ফলে সেক্স বৃদ্ধি পায়।

প্রিয় বন্ধুগণ রাতে কিসমিস খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে যেমন ঘুমানোর ন্যূনতম ৩০ মিনিট আগে কিসমিস খেতে হবে। ৩০ গ্রাম এর বেশি কিসমিস খাওয়া যাবেনা। বন্ধুগণ রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খেলে কি হয় আশা করি উপরের অংশটুকু পরে জানতে পেরেছেন।

শেষ কথা

বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল কিসমিস খেলে কি ওজন কমে ক্ষতিকর দিক উপকারিতা এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।


অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে কিসমিস খেলে কি ওজন কমে ক্ষতিকর দিক উপকারিতা এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url