আনারস এর গুরুত্ব পূর্ণ ২০ টি উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

আনারস একটি সুস্বাদু ও জনপ্রিয় ফল। আনারস সব ঋতুতেই পাওয়া যায়। টক ও মিষ্টি স্বাদ যুক্ত এই সব আনারসের চাষ হয় পাহাড়ি অঞ্চলে। বিভিন্ন ভিটামিন, প্রোটিন ও মিনারেল ভরপুর থাকায় মানব দেহের জন্য আনারস এর উপকারিতা অপরিসীম। আনারস এর গুরুত্ব পূর্ণ ২০ টি উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ নিয়ে হাজির হয়েছি।

প্রিয় পাঠক আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লগ আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত আনারস এর গুরুত্ব পূর্ণ ২০ টি উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ নিয়ে। এই আর্টিকেলে আপনারা আনারসের পুষ্টিগুণ, আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা, আনারস এর অপকারিতা সম্পর্কে জানবেন।

প্রিয় পাঠক আপনারা আনারসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে হলে নিচের লেখাগুলো ধৈর্য ও মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। আনারসের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। আনারসের পুষ্টিগুণ, আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা

এতে আছে ভিটামিন এ, সি, বি৫, বি৬, খনিজ লবণ, ব্রমোলিন, ফ্লেবোনয়েস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চিনি, ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। পুষ্টিকর সমৃদ্ধ আনারসে কোন শর্করা নেই। বন্ধুগণ এই ছিল আনারসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। প্রিয় পাঠক এবার যানবেন আনারসের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।

প্রিয় পাঠক এখন আমরা আলোচনা করব আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।

আনারসে থাকা ভিটামিন সি হলো এস্কলবিক অ্যাসিড এর উত্তম উৎস। ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, দুর্বলতা প্রতিরোধ করে এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।

আনারস ত্বক, মুখ, ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা কারোটিন, ব্রমোলিন, ফ্লেবোনয়েস ও ম্যাঙ্গানিজ। এই উপাদান গুলো ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

আনারস হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে ব্রমোলিন থাকার কারণে বদহজম হয়না। পেটের বিভিন্ন সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়ার দারুন কাজ করে এটি। কৃমিনাশক হিসেবে আনারসের দারুণ খাতি রয়েছে। ক্ষুদ্রাংশের জীবাণু নাশক হিসেবেও আনারস দারুন কার্যকরী।

আনারস ওজন কমাতে দারুন কার্যকরী। আনারসে রয়েছে প্রচুর ফাইবার ও অনেক কম ফ্যাট যার ফলে স্বাস্থ্যের জন্য এটি উপকারী। সকালে নাস্তার সাথে এক গ্লাস আনারস এর জুস খাওয়া অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। তাই ওজন কমাতে এটি খেতে পারেন।

আনারসে প্রচুর ব্রমোলিন থাকায় এটি সর্দি-কাশি সারাতে বেশ কার্যকরী। রিতু পরিবর্তন ও অন্যান্য যেকোনো কারণে সর্দি কাশি হতে পারে।

আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ। এই উপাদানগুলো হাড় গঠনে ও হাড় মজবুত করতে দারুন ভূমিকা রাখে। আনারস খেলে হাড়ের যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। তাই পরিবারের সকলের উচিত বেশি করে আনারস খাওয়া।

আনারস এর গুনাগুনে শেষ নেই। আনারস হাঁপানি দূরীকরণ করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই বেশি করে এই ফলটি খেতে পারেন।

আনারসে ফাইবার থাকে, ফাইবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ ভূমিকা রাখে। তবে মিষ্টি যুক্ত আনারসে বেশি সুগার থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের নির্দিষ্ট মাত্রায় আনারস খেতে হবে। অবশ্য চিকিৎসকরা ডায়াবেটিস রোগীদের আনারস খেতে নিষেধ করেন না। তবুও যতটা পারা যায় নিরাপদ থাকা ভালো।

হৃদ স্পন্দন ও হৃদ পেশির বিভিন্ন কার্যকারিতা সম্পাদন করে পটাশিয়াম। আনারসে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। তাই আনারস হার্ট এটাক ও স্টোক এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

আনারস শরীরের রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে। এর ফলে শরীরের রক্ত জমাট বাঁধে না। আনারস খেলে শিরা ধমনীর রক্ত বাহিত নালিতে কোন প্রকার ঝামেলা হয় না। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে এবং হৃদপিণ্ডকে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করতে সাহায্য করে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আনারস খাওয়ার ফলে দাঁত পরিষ্কার হয় ও মাড়ির জন্য বেশ উপকারী। আনারস খেলে দাঁতের পোকা দূর হয়, মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।

পেটের ক্রিমি বিনাশ করতে আনারস বেশ উপকারী ফল। নিয়মিত আনারস খেলে কয়েক দিনের মধ্যেই কৃমির উৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। পেটের ক্রিমি দূর করতে সকালবেলা খালি পেটে আনারস খেতে হবে।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত আনারস খেলে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি মিলে। বিভিন্ন রকমের ভিটামিন থাকায় কোলেস্টরেল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে আনারস।

আনারসে ভিটামিন ও অন্যান্য উপাদান বিদ্যামান থাকার কারণে এটি খেলে ত্বক সুন্দর থাকে। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের কালো দাগ দূর করে, ব্রণ, এজমা, মেছতার দাগ দূর করার পাশাপাশি ত্বকের বলি রেখা দূর করে আনারস।

আনারস খেলে চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল ঘন ও কালো লম্বা হয়। চুল থেকে খুশকি দূর করে তাই পরিশেষে বলা যায় চুলের জন্য আনারস বেশ উপকারী।

আনারস এর বিভিন্ন উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আপনারা আনারস এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পড়লেন। এবার আপনারা আনারস এর অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবেন।

গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া একদম উচিত নয়। আনারস খেলে গর্ভপাত হয়। গর্ভাবস্থায় আনারস খেতে হলে চিকিৎসক এর সাথে পরামর্শ করে খাওয়া উচিত।

দেখা গিয়েছে অনেকের আনারস খাওয়ার ফলে অনেকের এলার্জি বেড়ে যায়। তাই আনারস কেটে লবন দিয়ে ধুয়ে নেয়া উচিত।

গবেষণায় উঠে এসেছে যাদের বাতের ব্যথা রয়েছে তাদের আনারস খাওয়া একদমই উচিত নয়। আনারস খেলে বাতের ব্যথা বৃদ্ধি পায়।

কাঁচা আনারস কিংবা জুস খাওয়ার ফলে বমি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। মুখের ভিতরে ও গলায় লেসমা তৈরি হয়। অনেক সময় পেটে ব্যথা হতে পারে।

যাদের শরীরে ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের মিষ্টি আনারস অধিক মাত্রায় খাওয়া একেবারেই নিষেধ। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অধিক মাত্রায় আনারস খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস এর আশঙ্কা শত গুনে বৃদ্ধি পায়।

প্রিয় পাঠক এই ছিল আনারস এর অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। জনসচেতনতার ক্ষেত্রে পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।

শেষ কথা