ডাবের পানির ১৭ টি গুরুত্বপূর্ন উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক
ভূমিকা
আমরা সবাই কোনো না কোনো সময়ে একবার হলেও ডাবের পানি পান করেছি। এই ডাবের পানির
যে কত গুনাগুন তা আমরা অনেকেই জানিনা। ডাবের পানিতে অনেকগুলো নিউট্রিইয়াস পাওয়া
যায়, যেটা অন্য কোন ড্রিংকস এর মধ্যে পাবেন না। বন্ধুগণ, ডাবের পানির ১৭ টি
গুরুত্বপূর্ন উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক নিয়ে হাজির হয়েছি জানতে হলে সীমা আইটি
ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন।
বন্ধুগণ, আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরো একটি নতুন ব্লগ আর্টিকেল
নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত ডাবের পানির ১৭ টি
গুরুত্বপূর্ন উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক নিয়ে। এই আর্টিকেলে রয়েছে, ডাবের পানির
উপকারিতা ও ডাবের পানির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
ডাবের পানির উপকারিতা
এক কাপ ডাদের পানি অর্থাৎ ২৪০ এম এল ডাবের পানিতে আপনি পাচ্ছেন ৬০ ক্যালোরি, যা
দিয়ে আপনি অনেকক্ষণ এনার্জি ও শক্তি কাজে লাগাতে পারবেন। তারপরেও এতে পাচ্ছেন
ম্যাগনেসিয়াম ৪%, পটাশিয়াম ১৫%, ফসফরাস ২%, ক্যালসিয়াম ৪% এতসব ভিটামিন ও
পুষ্টিকর থাকায় আমরা ডাবের পানি থেকে যে উপকারিতা পায় বা ডাবের পানির উপকারিতা
নিচে উল্লেখ করা হলো।
ডায়রিয়া
ডায়রিয়া ও কলেরা রোগীদের ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হলে, দেহে পানি ও খনিজ
পদার্থের ঘাটতি দেখা দেয়। এই ঘাটতি পূরণ করতে ডাবের পানির উপকারিতা অপরিসীম।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
মানুষের শরীরে সব থেকে বেশি প্রয়োজন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। রিবো প্লাবিন,
নিয়াসিন, থায়ামিন ও পায়রাডক্সিন এর মত উপাদান ভরপুর বিদ্যামান রয়েছে। তাই
ডাবের পানি প্রতিদিন পান করলে দেহের ভিতর শক্তি এতটাই বৃদ্ধি পায় ফলে জীবাণু
গুলো কোনভাবেই ক্ষতি করার সুযোগ পায় না।
হাড় মজবুত করে
ডাবের পানিতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সহ আরো অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। বিশেষ
করে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম এই দুই উপাদান হাড় মজবুত করতে বেশ উপকারী। ছোট
শিশুদের হাড় মজবুত করতে ডাবের ভূমিকা অপরিসীম।
দাঁতের সুরক্ষায়
ডাবের পানিতে খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস উপস্থিতি উচ্চ
মাত্রায়। এসব খনিজ লবণ দাঁতের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, দাঁতের মাড়ি করে মজবুত
এছাড়াও দাঁত ও মারীর বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
শরীরকে শীতল রাখে
গরমে ছোট বড় সকলেরই দেহের অভ্যন্তরীণ ও বার্ধক্য তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ডাবের
পানি দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে শরীরকে রাখে ঠান্ডা।
ব্রেন ডেভেলপ করে
গবেষকদের মতে শিশুদের মস্তিষ্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ডাবের পানির উপকারিতা অপরিসীম।
ছোট শিশুদের নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়াতে পারেন।
রূপচর্চায় ডাবের পানি
তারুণ্য ধরে রাখতে ডাবের পানির উপকারিতা অপরিসীম। এটি সৌন্দর্য চর্চার প্রাকৃতিক
মাধ্যম ও চর্বি বিহীন পানীয়। মুখে জলবসন্তের দাগ সহ বিভিন্ন ছোট ছোট দাগ, ব্রণ,
এজমা, মেছেতার দাগ ইত্যাদি দূর করতে প্রতিদিন ডাবের পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে
পারেন।
ক্ষুধা মিটাই
ডাবের পানিতে বিভিন্ন ভিটামিন পুষ্টিগুণ থাকায় এটি খেলে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা
থাকে এবং শরীরে এনার্জির যোগান দেয়। ডাবের পানি ক্ষুধা নিবারণ করতে বেশ উপকারী।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য
ডাবের পানিতে থাকা এমাইনো এসিড ও টাইটানিক ফাইবার ইনসুলিন এর কার্যকারিতা
বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবে ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তাই
ডাবের পানি মিষ্টি হওয়া শর্তেও ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ভীষণ উপকারী।
তারণ্য ধরে রাখে
ডাবের পানিতে রয়েছে ট্রাইটো কেমিক্স নামক একটি উপাদান, যা শরীরের উপর বয়সের সাফ
পড়তে দেয় না ফলে তার অন্য ধরে রাখে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা যদি নিয়মিত ডাবের পানি
পান করে তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে।
কোষ বৃদ্ধি করে
যারা শরীর চর্চা ও ব্যায়াম করেন তাদের জন্য ডাবের পানি বেশ উপকারী। তাদের পানি
শরীরের মাংস পেশি ও বৃদ্ধি করতে পাশাপাশি মাসাল ধরে রাখতে বেশি উপকারী।
ডাবের পানির ক্ষতিকর দিক
ডাবের পানিতে এত সব ভিটামিন পুষ্টিগুণ থাকায় এর উপকারিতা অনেক, এত সব উপকারিতার
মাঝেও রয়েছে কিছু অপকারিতা। ডাবের পানি কাদের জন্য ক্ষতিকর বা ডাবের পানির
ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানতে হলে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।
কিডনি রোগ
যাদের কিডনি রোগ আছে তাদের ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। কিডনি রোগ
হলে পটাশিয়ামের মাত্রা দেহ থেকে বের হয় না। এদিকে ডাবের পানিতে পটাশিয়ামের
পরিমাণ অনেক তাই কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে ডাবের পানি ক্ষতিকর।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে
যারা ওজন কমাতে চান তাদের অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে ডাবের পানি না খাওয়াই ভালো।
ডাবের পানি শরীরে ক্যালরি মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়। অন্যান্য
ফলের তুলনায় ডাবের পানি খাওয়ার ফলে নিমিষেই ওজন বেড়ে যেতে পারে।
রক্তচাপ
ডাবের পানিতে থাকে অতিরিক্ত মাত্রায় সোডিয়াম। তাই অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে ডাবের
পানি খেলে শরীরের রক্তচাপ এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই ডাবের পানি প্রতিদিন
খাওয়া উচিত নয়, সপ্তাহে ৪ দিন খেতেই পারেন।
পুষ্টি উপাদান
অতিরিক্ত ডাবের পানি খাওয়ার ফলে শরীর থেকে গুরুত্বপূর্ণ পিষ্টি উপাদান
প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এর ফলে শরীর ডিহাইডেট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাজা পানি
ডাব কাটার সঙ্গে সঙ্গে তাজা পানি পান করা উচিত। দীর্ঘ সময় ধরে ডাবের পানি রেখে
দেওয়ার ফলে পানির পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায় ফলে সেই পানি থেকে তেমন কোন উপকারিতা
পাবেন না।
প্রিয় পাঠক এই ছিল ডাবের পানির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আশা করি
আপনারা ডাবের পানির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে মোটামুটি ভালো ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।
জনসচেতনতার ক্ষেত্রে এই আর্টিকেলটি পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
শেষ কথা
বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল ডাবের পানির ১৭ টি গুরুত্বপূর্ন
উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে
পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে
যোগাযোগ করতে পারে।
অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে
অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো
লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে
অবশ্যই শেয়ার করবেন।
শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে
দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে ডাবের পানির ১৭ টি গুরুত্বপূর্ন
উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট
ফলো
করুন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url