আতা ফলের ২২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
ভূমিকা
আতা ফল গ্রীষ্মকালীন একটি ফল, এই ফল পাকলে নরম ও রসালো হয়। এটি শরিফা, সিতা এবং
নোনা নামে পরিচিত। এই ফলের ভিতর থাকে ছোট ছোট কোষ। ফলের ভিতরে থাকে বিজ আর এই বিজ
ঘিরে থাকে নরম অংশ যেটা খেতে রসালো ও সমষ্টি। আতা ফলের অনেক উপকারিতা স্বল্প কিছু
রয়েছে অপকারিতা। আতা ফলের ২২ টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে হাজির হয়েছে।
প্রিয় পাঠক আশা করি ভালই আছেন। প্রতি দিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লগ
আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত আতা ফলের
উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। এই আর্টিকেলে রয়েছে, আতা ফলের উপকারিতা ও আতা ফলের
অপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হলে সীমা আইটি ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন।
আতা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
আতা পাকা ফলের বীজ কালো এবং কাঁচা ফলের বীজ সাদা। বিজ বিসাক্ত এটি গচ্ছিত ফল। আতা
ফলের বেশ কয়েকটি প্রজাতি ও উপকরন আছে। সবগুলোকে ইংরেজিতে কাস্টার্ড আপেল, সুগার
আপেল, সুগার পাইনাপেল বা সুচ বলা হয়। অঞ্চল ভেদে নামের কিছু পার্থক্য রয়েছে।
আতা ফলের বেশ কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে, চলুন জেনে নেয়া যায়। এতে রয়েছে
প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আইরন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস,
পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন সি, বি৬, এ, থায়ামিন, রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন,
প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি।
এতসব পুষ্টিগুণ থাকায় এই ফলে রয়েছে অনেক উপকারিতা। নিচে আতা ফলের উপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আতা ফলের উপকারিতা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে আতা ফল বেশ উপকারী। এই ফল খাওয়ার ফলে রক্তের
গ্লুকোজের মাত্রা কমায়। এছাড়াও এই ফল ডায়াবেটিস ফাইবার এর উপস্থিতিতে চিনির
শোষণ কমানো যায়।
হার্ট এটাক প্রতিরোধ
আতা ফলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আপনার হার্ট এটাক প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সেই
সঙ্গে এতে থাকা ভিটামিন বি৬ হোমোক স্টাইল নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি এই ফলে রয়েছে
অ্যামিনো অ্যাসিড যা হৃদরোগ এর ঝুঁকি কমায়।
ক্ষত সুখাই
গবেষকদের মতে আতাফলের বীজ ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে। এই বিষ ব্যবহারের মাধ্যমে
ত্বকের ভিতরে থাকা কোষ এর পুনরুদ্ধি পায় এবং ক্ষতস্থানের ব্যথা তাৎক্ষণিক ভালো
করে। এর ব্রিজে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ রয়েছে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
আতা ফলে রয়েছে পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া আতা ফল খাওয়ার ফলে শরীরের ভিতর জমে থাকা
খারাপ কোলেস্টরেল দূর করে এবং ভালো কোলেস্টরেল এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে,
ফলে আতা ফলের উপকারিতা অপরিসীম।
বদহজম প্রতিরোধক
তামা ও ড্রাইভ টি ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফলটি খুব সহজেই হজম হয় এবং শরীরের গুনাগুন
খুব সহজেই হয়। পাশাপাশি শরীরের গুনাগুন খুব সহজেই উপলব্ধি করা যায়। স্বাস্থ্য
বিশেষজ্ঞদের মতে আতাফল এর গুঁড়া এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেলে, আপনার ডায়রিয়া,
বদহজম, অম্বল এর মত সমস্যা নিমিষেই দূর হবে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি
আতা ফলে থাকা ফসফরাস খাবারের হজম শক্তি বাড়িয়ে তুলতে উপকারী ভূমিকা পালন কর। এই
ফল খাওয়ার ফলে খাদ্য ও হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, পেটের নানান রকম সমস্যা দূর করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক
এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আতা গাছের পাতা স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। স্তনের
কোষে থাকা বিষাক্ত টক্সিন দূর করে। এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পূর্ণ আপনার
কোষগুলো বিভিন্ন ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে।
ত্বকের যত্ন
আতা ফল ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। আতা ফল আপনার ত্বকের জন্য যাদুকরী ভূমিকা পালন করে।
ত্বকের ব্রণ, এজমা, ছোপ ছোপ কালো দাগ, রোদে পোড়া কালো দাগ দূর করে। বিশেষজ্ঞরা
বলেছেন, আতা ফল মোস্তোরাইজিন এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এমনকি এটি আপনার
বয়সের ছাপ দূর করে।
চুলের যত্ন
নিয়মিত আতা ফল খেলে দেখা গিয়েছে চুল পড়া বন্ধ হয়। চুলের গোড়া কালো ও মজবুত
হয়। চুল সিল্কি ও চুলের খুশকি দূর করে। চুলের যত্নে আতা ফলের উপকারিতা অপরিসীম।
মাথার উকুন নিরাময়
আপনার মাথায় যদি উকুন থেকে থাকে তাহলে আতা ফলের পাতা বেটে অথবা ব্লেন্ড করে তার
সঙ্গে অল্প একটু পানি মিশিয়ে মাথার চুলে ভালোভাবে মিশাবেন। এই ক্ষেত্রে সাবধান
থাকবেন যেন কোনভাবেই এই মিশ্রণ চোখে না যায়। এই মিশ্রণ মাথায় কিছুক্ষণ রাখার
ফলে উকুন মারা যাবে।
দাঁত ও মারি মজবুত করে
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন অন্তত সপ্তাহে একবার দাঁত পরিষ্কার করার জন্য আতা ফলের চামড়া
ব্যবহার করতে। এটি ব্যবহারের ফলে দাঁতের ক্ষয় রোধ হয় পাশাপাশি মারি মজবুত করে।
মানসিক চাপ কমায়
আতা ফলে থাকা ভিটামিন বি৬ আমাদের শরীরের মানসিক চাপ কমায়। আতা ফল নিউরো
ট্রান্সমিটার ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ফলে আপনার মানসিক চাপ কমে
যাই এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
হাঁপানি প্রতিরোধক
হাঁপানি প্রতিরোধক হিসেবে আপনি যদি মুলার রস খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আতা ফলের
রস খাবেন। এটি ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ যা আপনার হাঁপানি ও এজমা প্রতিরোধে সাহায্য
করে।
ওজন বাড়ায়
একটি বাটিতে মধু এবং আতা ফলের বীজ গুলো মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। প্রতিদিন
এই মিশ্রণ খাওয়ার ফলে দেখবেন আপনার ধীরে ধীরে ওজন বাড়তে শুরু করবে।
গর্ভাবস্থায় সহায়ক
বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়া গর্ভবাতের ঝোঁকিরাস করে।
গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়ার ফলে স্তনের দুধ বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি গর্ভবতী মা এর
শক্তির যোগান দেয় আতাফল।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে
আতা ফল গাছের মূলের খালের রস এবং ছাগলের দুধ একসঙ্গে খাওয়ার ফলে আপনার ডায়রিয়া
প্রতিরোধ করবে।
হাড় মজবুত করে
আতা ফলে প্রচুর ক্যালসিয়াম বিদ্যমান। শরীরের হাড় মজবুত রাখার জন্য পর্যাপ্ত
পরিমাণে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করতে সক্ষম এই আতা ফল।
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আপনারা আতা ফলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানলেন।
এখন আপনারা আতাফল এর অপকারিতা সম্পর্কে জানবেন।
আতা ফলের অপকারিতা
প্রিয় বন্ধুগণ, এতক্ষণ আপনারা আতা ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জানলেন। এখন আপনারা
আতা ফলের অপকারিতা সম্পর্কে জানবেন। কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আতা ফলের
অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
এলার্জি
আতা ফলের খোসা ও বিজে বিষাক্ত উপাদান থাকে যা আমাদের ত্বকে এলার্জি হতে পারে, এবং
চোখের ক্ষতি হতে পারে। তাই আতা ফল খাওয়ার সময় খোসা এবং বীজ সরিয়ে রাখা উচিত।
ঠান্ডা জনিত ফল
যাদের অল্পতেই ঠান্ডা লাগে তাদের আতা ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ আতা ফল এটি
ঠান্ডা জাতীয় ফল। এটি খেলে খুব সহজেই আপনার ঠান্ডা লাগতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
আতা ফল প্রতিদিন খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত রোগ দেখা দিতে পারে। গবেষকদের
দ্বারা প্রমাণিত।
ডায়রিয়া
কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে প্রতিদিন আতা ফল খেলে ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে
পারে। এছাড়াও অধিক পরিমাণে আতা ফল খেলে বদহজম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বমি বমি ভাব
আতা ফলে একটা ভিন্ন রকম সুভাষ রয়েছে। এই গন্ধ অনেকের পছন্দ হয় না। কোনো মানুষ
প্রথম অবস্থায় এই ফল খাওয়ার ফলে গা গোলানো, বমি বমি ভাব হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
প্রিয় পাঠক, এই ছিল আতা ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। ভালো
লেগে থাকলে অবশ্যই পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
শেষ কথা
বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয় উপযুক্ত
মাটি ও সময় এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন।
কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে
যোগাযোগ করতে পারে।
অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে
অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো
লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে
অবশ্যই শেয়ার করবেন।
শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে
দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয় উপযুক্ত
মাটি ও সময় এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন
নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট
ফলো
করুন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url