শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল - বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়

ভূমিকা

একটি শিশুকে তার বাবা-মা তাকে যেমন করে লালন পালন করবে ঠিক তেমনভাবে তার সন্তান গড়ে উঠবে। সকল বাবা-মায়ের উচিত তার সন্তান এর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ বন্ধন গড়ে তোলা। কোন সন্তান যদি ছোটবেলা থেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তাহলে সে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল - বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় কি?
শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল - বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়

প্রিয় পাঠক আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লগ আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটিতে রয়েছে, শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল, বাচ্চাদের মোবাইল দেখলে কি হয়, বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় ইত্যাদি। এই সকল তথ্য আপনারা সীমা আইটি ওয়েবসাইটে জানতে পারবেন।

শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল

বর্তমান সময়ে একটি শিশু ভাত খাওয়ার থেকে মোবাইল ফোন টিপা নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শিশু না খেয়ে থাকলে কোন সমস্যা হয় না কিন্তু মোবাইল ছাড়া কোনভাবেই তারা চলেনা। বেশিরভাগ অভিভাবক তার সন্তানদের মোবাইল ব্যবহার করার আসক্তি থেকে দূরে রাখার পরিবর্তে আধুনিকতার দুহাই দিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ব্যাপারে বাধা না দিয়ে উৎসাহিত করে।

ফলে এই আসক্তি তাদের সন্তানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, তা উপলব্ধি করতে পারছেন না সন্তানের মা-বাবারা। শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল নিয়ে হাজির হয়েছি। অল্প বয়সে শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে দূরে রাখুন নয়তো শিশুর যে সকল ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তা নিচে তুলে ধরা হলো।
  • মোবাইল ফোন টিপা আসক্তি যে সকল শিশু রয়েছে তাদের স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। শিশুদের মধ্যে যে স্বাভাবিক ধৈর্য ধারণ করার প্রবণতা তা ধীরে ধীরে কমে যায় এবং যে কোন কাজের মনোযোগ হ্রাস পায়। ফলে শিশু আস্তে আস্তে কুফল অসামাজিক ও উৎশৃংখল হয়ে পড়ে।
  • ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। ফলে মনোযোগ ঘাটতিজনিত চঞ্চলতা নামক জটিল রোগে ভোগে।
  • মোবাইলে অনেক সময় নানা ধরনের অনৈতিক ন্যুড জিনিস সামনে চলে আসে যা তারা ওটাকে অস্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে। ফলে অনৈতিকতার ও মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় কুফল ঘটে।
  • ছোট শিশুরা অনেকক্ষণ ধরে মোবাইল ফোন দেখার কারণে চোখের নানা ধরনের রোগজনিত সমস্যায় পরে।
  • ছোট শিশুরা শুয়ে বসে মোবাইল দেখার কারণে শিশুর খেলাধুলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ফলে ছোট বয়সে শিশুদের ওজন বেড়ে যায়। গবেষকরা বলেছেন এইসব শিশুরা পরবর্তীতে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি ড্যামেজ ইত্যাদি রোগে ভোগার সম্ভাবনা বেশি।
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আপনারা শিশুদের মোবাইল আসক্তির কুফল সম্পর্কে জানলেন। তাই সময় থাকতে সাবধান হয়ে যান। আপনার শিশুকে এখন থেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখুন। এতে আপনার শিশুর জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।

বাচ্চাদের মোবাইল দেখলে কি হয়

কমবেশি অনেক জায়গায় দেখা যায় শিশুরা ব্যাপকভাবে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। বাচ্চাদের মোবাইল দেখলে কি হয় জানেন কি? মোবাইল ফোন দিয়ে কেউ খেলছে গেম, আবার অনেকেই দেখছেন কাটুন, আবার অনেক শিশু দেখছেন নানান রকমের মুভি, আবার অনেকেই পর্ন সাইট গুলোতে প্রবেশ করছেন।


এ সকল শিশুরা নানা ধরনের বিকৃত রুচির যৌনকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। অস্বাভাবিক মারদাঙ্গা হলিউড ও বলিউডের সিনেমা গুলো দেখে তারা ধীরে ধীরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এতে তাদের আচার-আচরণ অস্বাভাবিক হচ্ছে। এই সকল শিশুরা ঠিকমতো খাবার, পড়াশোনা, খেলাধুলা বা অন্যান্য কোন কাজ নির্দিষ্ট সময় করতে পারছে না।

শিশুরা মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও গেম খেলে যার বেশিরভাগ কনটেন্ট সহিংসতা, রক্তপাত হামলা, ধ্বংসলীলা, হত্যা, চুরি, যৌনতা, প্রতারণা ও অমানবিকতায় লিপ্ত হচ্ছে। গবেষকরা বলেছেন এই সকল শিশুরা একপর্যায়ে পাগল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। শিশুর প্রেম ধীরে ধীরে খারাপ এর দিকে অগ্রসর হয়।

একজন অভিভাবক হয়ে আপনার সন্তানকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে তার হাতে থাকা স্মার্টফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখুন। প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আপনারা বাচ্চাদের মোবাইল দেখলে কি হয় সেই সম্পর্কে জানলেন। আশা করি আপনার বাচ্চার সুস্বাস্থ্য কামনা করবেন বলে আশা করা যায়। তাই সময় থাকতে সাবধান হয়ে যান।

বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায়

আজকাল যুগে অনেক শিশুদের মোবাইল আসক্ত নিয়ে অভিভাবকদের মনে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। বেশিরভাগ শিশুরাই স্মার্টফোনে নানান ধরনের গেমস, ভিডিও কনটেন্ট, টিকটক ভিডিও, ফানি ভিডিও, দেখতে পছন্দ করে এবং ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল ফোন নিয়ে সময় কাটায়।


বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমাতে হবে। অত্যাধিক মোবাইল আসক্তির কারণে মস্তিষ্কের কোষ থেকে ডোপামিন নিউরোট্রাস্নমিটার নিঃসৃত হচ্ছে। বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় জানতে হলে নিচের লেখাগুলো ধৈর্য এবং মনোযোগ সহকারে করতে থাকেন।
  • শিশুদের একাকিত্বের কারণে মোবাইল আসক্তি বেশি হয়ে থাকে। তাই তাদেরকে বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে রাখতে হবে যেমন, পড়াশোনা, খেলাধুলা, প্রশিক্ষণ, বাড়িতে নানান রকমের কাজ করার উৎসাহিত করা ইত্যাদি।
  • শিশুদের শৈশবকে উপভোগ করার জন্য তাদেরকে বিনোদনের ব্যবস্থা করাতে হবে। যেমন, বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে, খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকতে হবে, তাদেরকে মজার মজার গল্প শোনাতে হবে ইত্যাদি
  • শিশুদের মধ্যে বই পড়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রতিদিন শিশুদের বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে শোনাতে হবে এবং বিভিন্ন ধরনের গল্প শোনাতে হবে। তাহলে ধীরে ধীরে মোবাইল ফোন এর আসক্তি কমে যাবে।
  • প্রতিটি অভিভাবকদের শিশুদের সামনে মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমাতে হবে এবং পরিবার এবং শিশুদের সাথে পর্যাপ্ত সময় পার করতে হবে।
  • আপনার শিশুকে ঘরের দায়িত্ব দিন। বাড়িতে বিভিন্ন ছোট ছোট কাজের সহযোগিতা করার জন্য শিশুকে উৎসাহ প্রদান করুন।
  • মোবাইল ফোন থেকে শব্দ, ব্যানার, ভাইব্রেশন অর্থাৎ সকল ধরনের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখতে হবে।
  • বিভিন্ন ফিল্টারিং সফটওয়্যার আপনার মোবাইলে ব্যবহার বন্ধ করুন। আপত্তিকর ও পর্ন সাইটগুলো ফোন থেকে মুছে ফেলুন।
  • শিশুদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করুন এবং ইন্টারনেটের ভালো দিকগুলো নিয়ে সচেতন করুন।
  • প্রয়োজন ছাড়া আপনার শিশুকে ফোন ব্যবহার করতে দিবেন না।
  • আপনার শিশু কোন সফটওয়্যার সার্চ করছে বা কি দেখতে বেশি পছন্দ করে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করেন।
  • আপনার শিশুকে ভাত খাওয়ানোর সময় গেমস, কার্টুন, ফানি ভিডিও দেখিয়ে খাওয়ানোর অভ্যাস পরিহার করুন এবং ভাত খাওয়ানোর সময় বিভিন্ন ধরনের মজার মজার গল্প করুন।
  • আপনি কোন অ্যাপ কতক্ষণ ব্যবহার করবেন তার সময় আগে থেকে নির্ধারণ করে রাখতে হবে।
প্রিয় পাঠক আশা করি বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উপায় সম্পর্কে অনেকটাই ধারণা পেয়ে এগিয়েছেন। উপরের উল্লেখ করা দিকগুলো অনুসরণ করলে যে কোন শিশু মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবে বা আস্তে আস্তে ফোন ব্যবহার করা বন্ধ দিয়ে দিবে।

শেষ কথা

বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল খাঁটি সরিষার তেলের উপকারিতা ক্ষতিকর দিক চেনার উপায় এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।


অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে খাঁটি সরিষার তেলের উপকারিতা ক্ষতিকর দিক চেনার উপায় এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url