নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

ভূমিকা

চুল পড়ে যাওয়া সমস্যায় ভুগে থাকেন অনেকেই। অল্প বয়সে মাথায় টাক পড়ে যাচ্ছে নারী-পুরুষ উভয়। এই ক্ষেত্রে সৌন্দর্যের পাশাপাশি বাড়িতি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নতুন চুল গজাবে বলে অনেকেই বাজার থেকে নানান রকম কেমিক্যালযুক্ত ক্রিম কিনে ব্যবহার করে। তাদেরকে আমি নিমপাতার ব্যবহার করতে বলবো। নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলো।
নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লগ আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলে রয়েছে নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। চুলের নানান রকম সমস্যা দূর করতে হলে সীমা এটি ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন এবং ধৈর্য ধরে পুরো আর্টিকেল পড়ুন।

নিমের পাতায় প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, লিমোনয়েডস, ট্রাইগ্লিসাইড রয়েছে। ছেলে মেয়ে উভয়ের চুলের ড্যানড্র, চুল পড়া, চুল পাকা, চুলের গুঁড়া মজবুত, লাল হয়ে যাওয়া, শুষ্ক ও রুক্ষ চুল পেতে নিমপাতার ব্যবহার অপরিসীম।

নিম পাতা চুলে দেওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলো নিয়ম অনুসরণ করে চুলে ব্যবহার করলে চুলের সকল সমস্যার থেকে মুক্তি পাবেন। চলুন নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

নিমের পাতা ও নারকেল তেল

একটি পাত্রে নারকেল তেল এর মধ্যে নিমপাতা ভালো করে সিদ্ধ করে নিন। তেল ভালো করে ছেঁকে নিয়ে ঠান্ডা করতে দিন। এবার ঠান্ডা হওয়া নিমের পাতা ও নারকেল তেল মাথায় ভালো করে মালিশ করুন, এক ঘন্টা পর মাইল শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে ওয়াশ করে নিন।


নিমের পাতা ও নারকেল তেল আপনার চুলের ড্যানড্রব অর্থাৎ খুশকি দূর করবে, চুলের গুড়া মজবুত করবে, চুল পড়া বন্ধ হবে ইত্যাদি। চুল সুস্থ ও সুন্দর রাখতে নিমের পাতা ও নারকেল তেল এর এই মিকচার প্রতিদিন একবার মোটামুটি ৩০ দিন ব্যবহার করলে চুলের জন্য ভালো ফলাফল পাবেন।

নিম ও দই এর পেস্ট

নিম পাতা ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে ব্লেন্ডার মেশিনের সাহায্যে ব্ল্যান্ড করে নিন অথবা সিল পাটায় বেটে নিতে পারেন। এর সঙ্গে দই মিশিয়ে ভালো হবে মিক্সচার করে নিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। কিছুক্ষণ পর নিম ও দই এর পেস্ট চুলে ভালোভাবে মালিশ করুন, এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।


দইয়ে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড চুল ক্লিন করতে এবং চুল পড়া সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে। এই নিম ও দই এর পেস্ট উপাদানটি চুলের ড্যানড্রপ অর্থাৎ খুশকি দূর করতে দারুন ভূমিকা পালন করে। তার পাশাপাশি চুল পাকা, অকালে চুল ঝরে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।

নিমের পানি

এই উপাদানটি তৈরি করা খুব সহজ। নিমের পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে একটি পাত্রে ১৫ মিনিট ধরে আগুনে ফুটিয়ে নিন। দেখবেন পানির কালার কিছুটা পরিবর্তন এসে গিয়েছে। ভালোভাবে ছেঁকে নিয়ে ঠান্ডা করতে দিন। চাইলে এই নিমের পানি শ্যাম্পু করার আগে বা পরে চুল ধোয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।


অথবা এই নিমের পানি উপাদান চুলে ভালোভাবে মিশিয়ে ১০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এই উপাদান আপনার চুলের ড্যানড্রব দূর করতে দারুন ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি চুল এর গোরা শক্ত করে, চুল পড়া বন্ধ করে, চুলের ভিটামিন বাড়ায়, চুলের শক্তি যোগান দেয়। আপনারা সপ্তাহের দুই বার এই নিমের পানি ব্যবহার করতে পারেন।

নিম ও অ্যালোভেরার পেস্ট

এই উপাদানটি তৈরি করতে নিম ও অ্যালোভেরা অথবা অ্যালোভেরার জেল ও নিম অয়েল এর প্রয়োজন হবে। অ্যালোভেরা জেল এর সাথে সামান্য নিম এর তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর নিম ও অ্যালোভেরার পেস্ট চুলে ভালোভাবে মিশিয়ে ৩০ মিনিট ধরে রেখে দিন। ৩০ মিনিট পর ভালো শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিন।

নিম ও অ্যালোভেরার পেস্ট এই উপাদান চুল কে নারিশ করতে ও চুল মজবুত করতে সাহায্য করে এবং নিম অয়েলে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও আন্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য চুলের গোড়া থেকে ড্যানড্রব দূর করতে বেশ কার্যকরী। পাশাপাশি নিম ও অ্যালোভেরার পেস্ট নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে, চুল পড়া বন্ধ করে, চুলের শক্তির যোগান দেয়।

প্রিয় পাঠক চুল ঘন, মজবুত, কালো, লম্বা, উকুনমুক্ত, সিল্কি চুল পেতে আরো কিছু নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের জানাবো। চলুন নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • নিমপাতা বেটে পেস্ট বানিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার চুলের উকুন, চুল পড়া বন্ধ, নতুন চুল গজাবে, চুল পাকা বন্ধ হবে, চুল সিল্কি হবে, চুল লম্বা হবে ইত্যাদি। চুলের জন্য নিমের পাতার উপকারিতা অপরিসীম। নিম পাতায় রয়েছে বহু গুণাগুণ।
  • এছাড়াও আপনারা নিমপাতার পেস্ট এবং মধু একসঙ্গে মিশিয়ে চুলের ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে ৩ দিন এই উপাদানটি ব্যবহার করলে। চুলের নানান রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
  • ২ চামচ আমলকির রস, ২ চা চামচ লেবুর রস, অল্প পরিমাণে টক দই, অল্প পরিমাণে নিমের পাতার পেস্ট ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এই উপাদানটি সপ্তাহে ৩ দিন ব্যবহার করলে চুলের জন্য ভালো ফলাফল পাবেন।
  • নিম পাতার সিদ্ধ পানি এবং মধু একসঙ্গে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার চুলের সকল ধরনের সমস্যা দূর করতে বেশ উপকারী কন্ডিশনার।
  • নিম পাতার পেস্ট এবং কয়েক ফোটা অর্গানিক অয়েল ভালোভাবে মিক্সার করে নিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার চুলের সকল ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

প্রিয় পাঠক শুধু নিমের পাতা ব্যবহার করলে হবে না চুলের যত্নের জন্য জীবনযাত্রা পরিবর্তন করতে হবে। অনিয়মিত ঘুম, অনিয়ম করে খাওয়া দাওয়া এইগুলো সময় মত করতে হবে পাশাপাশি বেশি করে পানি পান করতে হবে। বন্ধুগণ এই ছিল নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

শেষ কথা

বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।

অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url