তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয় উপযুক্ত মাটি ও সময়
ভূমিকা
তরমুজ, মিষ্টি ও পানি জাতীয় এই ফল চারা রোপণ থেকে গাছ থেকে ফোল তোলা পর্যন্ত
কেমন করে রোপন করবেন, তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয় উপযুক্ত মাটি ও সময় চাষ করলে ভালো
ফলন পাওয়া যাবে। তরমুজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে সীমা আইটি ওয়েবসাইটে
সঙ্গে থাকুন।
প্রিয় পাঠক আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লগ
আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত তরমুজ কোন
জেলায় বেশি হয় উপযুক্ত মাটি ও সময় নিয়ে।
এই আর্টিকেলে রয়েছে তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয়, তরমুজ চাষের উপযুক্ত মাটি, তরমুজ
চাষের উপযুক্ত সময়, তরমুজ চাষে সারের পরিমান ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন এই
আর্টিকেলে।
তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয়
উপরে সবুজ, ভিতরে লাল ছোট ছোট কালো বিচি, এটি গ্রীষ্মকালের পানি পিপাসা মিটানোর
একটি দারুণ ফল। সকলের কাছে তরমুজ নামে পরিচিত। প্রিয় পাঠক, এই তরমুজ কোন জেলায়
বেশি হয় আপনি কি জানেন? তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয় জানতে হলে নিচে লেখাগুলো মনোযোগ
সহকারে পড়তে থাকুন।
কৃষি গবেষকদের মতে, বাংলাদেশের মধ্যে সবচাইতে বরিশাল অঞ্চলে তরমুজ বেশি উৎপন্ন
হয়। এই অঞ্চলে ড্রাগন, জাগর এবং সুপার এই তিন প্রজাতির তরমুজ বেশি উৎপন্ন হয়।
বরিশাল এই অঞ্চল থেকে তরমুজ দেশের রাজধানী সহ নানান বিভাগ ও জেলায় সরবরাহ করা
হচ্ছে। বরিশাল বিভাগের তরমুজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪ হাজার ৬৮৮ হেক্টর জমি।
আবাদ হয়েছে, ৪৬ হাজার ৪৫১ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে প্রায় ১২ হাজার
বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে তরমুজ এর। এদিকে ডিপ জেলা ভোলায় মাঠ ভর্তি তরমুজ ও
তরমুজের বাম্পার ফলন নেমেছে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে ভোলায় ১৮ হাজার ৩০০ হেক্টর
জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে দ্বিগুণ জমিতে।
তরমুজ চাষীদের বক্তব্য, এই মৌসুমে তরমুজ চাষের ক্ষেত্রে তেমন বৃষ্টিপাত না হয়াই
মাঠে আগের বছর এর তুলনায় এই বছর অধিক পরিমাণে ফলন নেমেছে। এতে লাভবান হচ্ছে
কৃষকরা। প্রিয় পাঠক তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয় আশা করি আপনারা উপরের অংশটুকু পড়ে
এতক্ষণে ভালো ধারনা পেয়ে গিয়েছে।
তরমুজ চাষের উপযুক্ত মাটি
প্রিয় পাঠক আপনারা কি তরমুজ চাষের উপযুক্ত মাটি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, তাহলে
এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ও মনোযোগ সহকারে
পড়তে থাকুন তাহলে তরমুজ চাষের উপযুক্ত মাটি সম্পর্কে ভালো ধারণা পেয়ে যাবেন।
কথা না বাড়িয়ে চলুন তরমুজ চাষের উপযুক্ত মাটি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
তরমুজ সাধারণত গভীর উর্বরতা মৃত্তিকা ও মাটিতে অধিক পরিমাণে জৈব সার ও শক্তি
সম্পূর্ণ জমিতে তরমুজ চাষ ভালো হয়। তরমুজ সাধারণত বেলে মাটিতে ভালো হয়। আবার
বালি যুক্ত দোআঁশ মাটিতে তরমুজ জন্মালে সেই গাছের ফলন ভালো হয়। তবে তরমুজ চাষের
ক্ষেত্রে বালিযুক্ত দোআঁশ মাটিতে তরমুজ বেশি উৎপন্ন হয়।
এছাড়াও কৃষি গবেষকদের মতে, কোনো পুকুর খনন করেলে অর্থাৎ পুকুরের মাটি কোন একটি
নির্দিষ্ট জায়গায় রেখেছে সেখানে তরমুজ এর বীজ বললে ভালো ফলন পাওয়া যায়। নতুন
কাটা মাটি তরমুজ চাষের জন্য বেশ উপকারি। প্রিয় পাঠক আসা করি তরমুজ চাষের উপযুক্ত
মাটি সম্পর্কে ভাল ধারনা পেয়ে গিয়েছেন।
তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময়
প্রিয় পাঠক আপনি যদি গুগলে তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে খুঁজে থাকেন,
তাহলেই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ও মনোযোগ
সহকারে পড়তে থাকুন আশা করি তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে ভালো ধারণা আপনারা
পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত তরমুজ
চাষের উপযুক্ত সময়। তবে অনেকেই আগাম ফলনের জন্য, বেশি লাভের আশায়, জানুয়ারি
মাস থেকে তরমুজ চাষ শুরু করে দেয়। তরমুজ এর অনেক রকম জাত রয়েছে। কিছু কিছু জাত
সারা বছর উৎপন্ন হয়।
তবে তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময়, বীজ বোনার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম পক্ষ
অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম পনেরো দিন এর মধ্যে তরমুজ এর বীজ রোপন করতে হবে।
আগাম তরমুজ এর কিছু জাত রয়েছে যেগুলো নভেম্বর ও ডিসেম্বর এর মাঝামাঝি রোপন করা
যায়। প্রিয় পাঠক এই ছিল তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময় নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।
তরমুজ চাষে সারের পরিমান
প্রিয় পাঠক এখন আপনারা তরমুজ চাষে সারের পরিমান সম্পর্কে জানতে হলে নিচের
লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। তরমুজ চাষের ক্ষেত্রে জমিতে পাওয়ার টিলার
দ্বারা চাষ করে নিতে হবে তারপর, ২ মিটার পর পর মাদা তৈরি করতে হবে। প্রতিটি
মাদাতে সার প্রয়োগ করে যারা গোপন করা উচিত।
মাদা তৈরির ক্ষেত্রে যে সকল সার ব্যবহার করবেন, প্রতি শতাংশে গোবর বা কম্পোজ ৮০
কেজি, পিএসপি ৪০০ গ্রাম, মুক্তা প্লাস ( জিং সালফেট ) ৫০ গ্রাম, ম্যাগ প্লাস ১০০
গ্রাম, হেসালফ ( ৮০% সালফার ) ৩০ গ্রাম, কার্বোকুরান ১০০ গ্রাম। প্রতিটি মাদা ৫০
সেন্টিমিটার প্রশস্ত ও ৩০ সেন্টিমিটার গভীর করে এতে জৈব সার ও কম্পস্থার দিতে
হবে।
প্রতিটি মাদায় দুইটি করে গাছ থাকতে হবে। প্রতিটি চারার বয়স ১০ থেকে ১৫ দিন হলে
দুই একদিন পরপর পানি দিতে হবে। পরবর্তী পরিচর্যা হিসেবে মাদায় চার কিস্তিতে সার
প্রয়োগ করতে হবে।
- প্রথম কিস্তি, চারা রোপনের ১০ থেকে ১৫ দিন পর। ইউরিয়া ৪০ কেজি, এমপি ৩২ কেজি।
- দ্বিতীয় কিস্তি, প্রথম ফুল ফোটার সময়। ইউরিয়া ২৫ কেজি, এমপি ৩২ কেজি।
- তৃতীয় কিস্তি, ফল ধরনের সময়। ইউরিয়া ২৫ কেজি, এমপি ৩২ কেজি।
- চতুর্থ কিস্তি, ফল ধারণের ১৫ থেকে ২০ দিন পর। ইউরিয়া ২৫ কেজি, এমপি ৩২ কেজি।
শুষ্ক মৌসুমীর তরমুজ গাছে সেজ দেওয়া খুব প্রয়োজন। তবে খেয়াল রাখবেন গাছের
গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে। তরমুজ গাছে শস্য পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ( টিডো
প্লাস এবং এমকোজিন ) একসাথে স্প্রে করে দিতে পারে।
ছোট ছোট কিছু পোকার আক্রমণ যেমন লাল মাকর ও হলুদ মাকড় এদের দূর করতে নোভাষ্টার
৫৬ ইসি ৭ থেকে ১০ দিন পর পর স্প্রে করে দিতে হবে। তরমুজ এর কান্ড কষা রোগ দেখা
দিলে হেমেনকোজেব ৫ থেকে ১০ দিন পর পর স্প্রে করে দিতে হবে।
তরমুজ এর বিচল পোকা দমনে রিপকর্ড ১০ ইসি ৭ থেকে ১০ দিন পর পর স্প্রে করে দিতে
হবে। প্রিয় পাঠক এই ছিল তরমুজ চাষে সারের পরিমান এর বিস্তারিত তথ্য। ভালো লেগে
থাকলে পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করবেন।
শেষ কথা
বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয় উপযুক্ত
মাটি ও সময় এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন।
কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে
যোগাযোগ করতে পারে।
অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে
অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো
লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে
অবশ্যই শেয়ার করবেন।
শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে
দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে তরমুজ কোন জেলায় বেশি হয় উপযুক্ত
মাটি ও সময় এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন
নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট
ফলো
করুন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url