পুদিনা পাতার উপকারিতা ক্ষতিকর দিক ২০ টি খাওয়ার নিয়ম
ভূমিকা
রান্নায় সুগন্ধ ও স্বাদ বৃদ্ধির বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পুদিনা পাতার উপকারিতা
অপরিসীম। তবে ঔষধ হিসেবে এই পাতার ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে, এটি অনেকের অজানা।
কিভাবে খাবেন এই পাতা, পুদিনা পাতার ঔষধি গুনাগুন পেতে পুদিনা পাতার উপকারিতা
ক্ষতিকর দিক ২০ টি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পড়তে থাকুন।
প্রিয় পাঠক, আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লগ
আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত পুদিনা পাতার
উপকারিতা ক্ষতিকর দিক ২০ টি খাওয়ার নিয়ম নিয়ে। এই আর্টিকেলে রয়েছে, পুদিনা
পাতার উপকারিতা, পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক, পুদিনা পাতা কিভাবে খাব ইত্যাদি।
পুদিনা পাতার উপকারিতা
- রোদে পোড়া ত্বকের জ্বালা কমাতে, পুদিনা পাতার রস ও অ্যালোভেরার রস একসঙ্গে একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- ব্রণ দূর করতে ও ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর করতে তাজা পুদিনা পাতা বেটে তোকে লাগান, ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ দূর করতে প্রতিদিন রাতে পুদিনা পাতার রস লাগান, সম্ভব হলে সারারাত রাখুন।
- চুলে উকুন হলে পুদিনার সেকরের রস লাগাতে পারেন। উকুনের মোক্ষম ঔষধ হলো পুদিনা পাতা ও শিকড় এর রস। পুরো মাথায় চুলের গোড়ায় এই রস ভালোভাবে মাখিয়ে চুলে একটি পাতলা কাপড় এক ঘণ্টা পেঁচিয়ে রাখুন তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিন। এভাবে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে চুলের উকুন দূর হবে।
- সর্দি হলে না বুঝে যায়, শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট পান অনেকেই। সেই সময় যদি পুদিনা পাতার রস খান তাহলে এই কষ্ট থেকে রেহাই পাবেন নিমিষেই।
- যাদের এজমা ও কাশির সমস্যায় ভুগেন তাদের তাৎক্ষণিক পুদিনা পাতার রস বেশি কার্যকরী। খুব বেশি নিঃশ্বাসের সমস্যায় পড়লে, পুদিনা পাতার রস গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানির ভাব নিতে থাকুন। ভাব নিতে অসুবিধা হলে গলায় দিয়ে গল গল করার চেষ্টা করুন।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে গোলাপ, পুদিনা পাতা, আমলা, বাঁধাকপি ও শসা একত্রে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে ত্বকে অ্যাপ্লাই করুন। এই মিশ্রণটি নিয়মিত বেশ কিছুদিন ব্যবহার করলে ত্বক ভিতর থেকে হবে উজ্জ্বল।
- পুদিনা পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, মেন্থল ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যা পেটের যেকোনো সমস্যা সমাধান করতে পারে খুব দ্রুত। যিনারা হজমের সমস্যা, পেটের ব্যথা কিংবা পেটের নানা সমস্যাই ভুগে থাকেন তারা খাবার খাওয়ার পর এক কাপ পুদিনা পাতার চা খাওয়া অভ্যাস করুন।
- গরমকালে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে পুদিনা পাতার উপকারিতা অপরিসীম। গোসলের আগে পানিতে কিছু পুদিনা পাতা ফেলে রাখুন। সেই পানি দিয়ে গোসল করলে শরীর ও মন চাঙ্গা থাকে।
- অনেকের দেখা যায় পুরো শরীরে ফোসকা পড়েছে। এটিকে অনেকেই হাম বা মা আবার অনেকেই বসন্ত রোগ বলে। শরীরে কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করলে শরীরের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে পুদিনা পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করুন। এতে শরীরের ব্যাকটেরিয়া হারাতে বেশ উপকারী।
- তাৎক্ষণিক শরীরের যেকোনো ব্যথা ও পচা ঘা থেকে রেহাই পেতে পুদিনা পাতার বেটে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে রাখুন। চামড়ার ভিতরে গিয়ে নার্ভে পৌঁছে এই রস তাই মাথাব্যথা বা জয়েন্ট এর ব্যথা অথবা পচা ঘা এর ব্যথা থেকে খুব সহজেই মুক্তি মিলে এবং পচা ঘা এর ক্ষতস্থান খুব সহজেই খেয়ে ফেলে।
- বহু বিজ্ঞানীদের দাবি পুদিনা পাতা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। পুদিনা পাতায় থাকে এক ধরনের অ্যালকোহল যা ক্যান্সার কোষ হওয়া থেকে বাধা সৃষ্টি করে থাকে।
- আপনার যদি অতিরিক্ত গ্যাস হয়ে থাকে তাহলে পুদিনা পাতার রস ও পানি একসঙ্গে খান। পাঁচ মিনিটের মধ্যে আপনার পেটের গ্যাস থেকে মুক্তি পাবেন। পুদিনা পাতার রস মাথা ধরা রোধ করতেও বেশ উপকারী।
- নিয়মিত পুদিনা পাতার রস খাওয়ার ফলে বুকে কফ কম জমা হয়। এখানে মুখ্য ভূমিকা রয়েছে মেন্থল, যা ফুসফুস এরমধ্যে আটকে থাকা নিউ ক্লাসকে ছড়িয়ে দেয়। তার সাথে সাথে নাকের পলিপাস দূর করে।
- দাঁত ও মারীর ইনফেকশন দূর করতে পুদিনা পাতার উপকারিতা অপরিসীম। পুদিনা পাতায় রয়েছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ। আমাদের মুখের ভিতর এর ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এবং তার সাথে সাথে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে ও দাঁত এর ক্ষয় রোধ করে।
- স্মৃতিশক্তির উন্নত করে। নিয়মিত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খাওয়ার ফলে ব্রেনের পাওয়ার বৃদ্ধি পায়, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। এর ফলে আমাদের উপস্থিত বুদ্ধি বৃদ্ধি পায় ফলে আমরা সব জিনিস মনে রাখতে পারি।
পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক
প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আপনারা পুদিনা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
জানলেন। এবার আপনারা পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানবেন। চলুন কথা না
বাড়িয়ে শুরু করা যাক পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
সুগন্ধীর জন্য পুদিনা পাতা অনেক বেশি জনপ্রিয়। পুদিনা পাতা এটি প্রকৃতির দেওয়া
ভেষজি গাছ তাই এর তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তবে অধিক মাত্রায় পুদিনা
পাতা গ্রহণ করলে,
যৌন জীবনের জন্য এটি মোটেও ভালো নয়। এটি শরীরে যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী হরমোনের
টেসটোসটের মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় ফলে যৌন উত্তেজনা কমে
যায়। পুদিনা পাতা শিশুদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট এবং মুখে জ্বালাপোড়ার কারণ হতে
পারে।
অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে ব্লাডের সুগারের মাত্রা কমে যায়। আবার অনেকের
শরীরে এলার্জি দেখা দিতে পারে। প্রিয় পাঠক, এই ছিল পুদিনা পাতার ক্ষতিকর দিক
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
পুদিনা পাতা কিভাবে খাব
পুদিনা পাতা কিভাবে খাব অনেকের কাছে কঠিন প্রশ্নের সহজ উত্তর এবং অনেকের কাছে সহজ
প্রশ্নের কঠিন উত্তর। চলুন জেনে নেয়া যাক পুদিনা পাতা কিভাবে খাব সে সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য। সাধারনত পুদিনা পাতা খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিভিন্ন
তৈরি তরকারিতে বেশি ব্যবহার করা হয়।
আরো পড়ুন চুলে নিম পাতার ১০ টি উপকারিতা
আপনি যদি শরীরের রোগ নিরাময় করতে চান তাহলে এই পুদিনা পাতা ভালো করে পরিষ্কার
করে ধুয়ে নিয়ে কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খেতে পারবেন আবার ব্লেন্ডার মেশিন এর
সাহায্যে জুস বানিয়ে খেতে পারেন। পুদিনা পাতা সকালে খালি পেটে খাওয়ার ফলে এর
উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন পুদিনা পাতা খাওয়ার পর পেট
ভরে পানি খাবেন।
শরীরের রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে পুদিনা পাতাকে পানিতে ফুটিয়ে চা এর মত খেতে
পারেন। প্রিয় পাঠক পুদিনা পাতা কিভাবে খাব আশা করি এ সম্পর্কে আপনারা অনেকটাই
ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।
শেষ কথা
বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল পুদিনা পাতার উপকারিতা ক্ষতিকর
দিক ২০ টি খাওয়ার নিয়ম এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে
পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে
যোগাযোগ করতে পারে।
অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে
অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো
লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে
অবশ্যই শেয়ার করবেন।
শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে
দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে পুদিনা পাতার উপকারিতা ক্ষতিকর দিক
২০ টি খাওয়ার নিয়ম এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন
এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট
ফলো
করুন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url