কমলার জুসের উপকারিতা কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা

ভূমিকা

কমলা অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল, দেখামাত্রই সবার খেতে মন চায়। শুধুমাত্র সুস্বাদু বললে ভুল হবে কমলার জুসে ও খোসায় রয়েছে অজস্র ভিটামিন, মিনারেল, নিউট্রিয়েন্ট, রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা। কমলার জুসের উপকারিতা কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা পুষ্টিগুণ নিয়ে হাজির হয়েছি, জানতে হলে সঙ্গে থাকুন।
কমলার জুসের উপকারিতা কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা

প্রিয় পাঠক আশা করি ভালই আছেন। প্রতিদিনের মতো আজকেও আরও একটি নতুন ব্লগ আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত কমলার জুসের উপকারিতা, কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা, কমলার খোসার অপকারিতা, কমলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে।

কমলার জুসের উপকারিতা

আমরা সাধারণত স্বাধের জন্য এই ফলটিকে খেয়ে থাকলেও এই ফলটিকে খাওয়ার ফলে আমরা অনেক রোগ থেকে বাঁচতে পারি। কমলার জুস আপনাকে কি ধরনের রোগ থেকে রেহাই দিতে পারে তা আজকের এই আর্টিকেলটি না পড়লে আপনারা জানতে পারবেন না। প্রিয় বন্ধুগণ, কমলার জুসের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে ধৈর্য ও মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
  • তীব্র গরমে কঠোর পরিশ্রম করছেন? শরীর প্রচন্ড ক্লান্ত? বিশ্রাম নেওয়ার সময় এক গ্লাস কমলার জুস পান করুন। এতে আপনার ক্লান্তি ভাব দূর হবে শরীরে দ্রুত এনার্জি ফিরে পাবেন এবং শরীর ঠান্ডা হবে।
  • বাসে বা বিভিন্ন যানবাহনে উঠে গা বমি হচ্ছে, তৎক্ষণাৎ আশেপাশের দোকান থেকে কমলার জুস খেতে পারেন। গা বমি ভাব দূর করতে কমলার জুসের উপকারিতা উচ্চমাত্রায়।
  • রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আমরা বিভিন্ন রকমের ঔষধ সেবন করে থাকি। এই ঔষধ এর যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। আর এই অপকারিতা থেকে রক্ষা করতে পারে কমলার জুস। কমলার জুস সেবন করার ফলে শরীরের বায়োকেমিক্যাল ও সাইকোলজিকাল প্রভাব এর ফলে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।
  • কমলার জুসে উচ্চ মাত্রায় খনিজ উপাদান থাকায় এটি আমাদের হৃদ স্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি হৃদস্পন্দন সুস্থ রাখে। পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম এর মত খনিজ উপাদান গুলো শরীরে সোডিয়ামের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  • কমলা চরবিহীন আঁশ হওয়াই সোডিয়াম মুক্ত ও কোলেস্টরেল মুক্ত কমলার জুস খাওয়ার ফলে হৃদপিণ্ড ঠিক থাকে।
  • কমলায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এর পাশাপাশি রয়েছে আলফা ও বেটা কেরোটিন এর মত ফ্লাবোনেট ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ। এইজন্য কমলার জুস খাওয়ার ফলে আপনার শরীর থেকে সকল ধরনের ক্যান্সারী কোষ গুলো নিমিষে দূর করে দিতে পারে।
  • ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে না জানি আপনি বাজার থেকে কত ধরনের প্রোডাক্ট কিনে ব্যবহার করেন। ত্বকের সৌন্দর্য ও উজ্জ্বলতার বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন সিট প্রয়োজন। কমলার জুসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে তাই এই ফল খাওয়ার ফলে ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী।
  • কমলার জুসে প্রচুর পরিমাণে পেকটিন অর্থাৎ আঁশ রয়েছে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে তারা সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন করে কমলার জুস পান করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার দেহের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
  • কমলার জুসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা মানবদেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এ রুপান্বিত নেই। তাই কমলার জুস খাওয়ার ফলে জয়েন্ট এর প্রদাহ কমায় পাশাপাশি বাতের ব্যথা দূর করে।
  • প্রতিদিন যদি এক গ্লাস করে কমলার জুস খাওয়া যায় তাহলে ব্রেন ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা থেকে একেবারেই মুক্তি পাওয়া যায়। বিশেষত ডিফেন্সিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যায়।

কমলার খোসার অপকারিতা

ভিডিও পাঠাও কমলার খোসার অজস্র উপকারিতা রয়েছে, তবে কমলার খোসার তেমন কোন অপকারিতা নেই বললেই চলে। আমরা সকলেই জানি অতিরিক্ত মাত্রায় যেকোনো কিছু ব্যবহার করলে আমাদের শরীরে নানান রকমের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ঠিক তেমনি অতিরিক্ত মাত্রায় কমলার খোসা ব্যবহার করলে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • কমলা ঠান্ডা জাতীয় ফল তাই অতিরিক্ত মাত্রায় এর কাঁচা খোসা খাওয়ার ফলে বুকে কফ জমতে পারে।
  • অতিরিক্ত মাত্রায় কমলার খোসা খেলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • অতিরিক্ত মাত্রায় কমলার খোসা খাওয়ার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • অতিরিক্ত মাত্রায় কমলার খোসা খাওয়ার ফলে বুক জ্বালাপোড়া, বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
  • কমলার খোসা সরাসরি ত্বকে অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করলে ত্বকে এলার্জির জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যাদের হার্ট ও কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত মাত্রায় কমলার খোসা খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো।
প্রিয় বন্ধুগণ, সাধারণত এইগুলো হচ্ছে কমলার খোসার অপকারিতা। উপরের অংশটুকু কমলার খোসার অপকারিতা পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে পরিচিত ব্যক্তিদের সাথে শেয়ার করুন।

কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা

বর্তমান আলোচনার বিষয় কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা। আমরা অনেকেই কমলা খাই কিন্তু কমলা লেবুর খোসা ফেলে দিই। এর উপকারিতা সম্পর্কে তেমন কোন ধারনা না থাকায় আমরা এটিকে ফেলে দিই। এই আর্টিকেল এর নিচের তথ্যগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকেন তাহলে কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেন।

  • কমলার খোসা খাওয়ার ফলে এটি কফের সমস্যা ও পিত্তের সমস্যা সরাসরি দূর করে দেয়।
  • কমলার খোসায় পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিফাঙ্গাল রয়েছে যা আমাদের ফুসফুস কে তরতাজা করে তোলে।
  • যাদের ঠান্ডা লাগা বা ত্বকে অসুখে ভুগছেন তাদের জন্য কমলালেবু কমলালেবুর খোসা খুবই উপকারী।
  • বুকের কফ দূর করতে কমলালের খোসা বেশ দারুণ উপকারী।
  • পেটের সংক্রমণ ও নানান রকমের সমস্যা থেকে বাঁচতে কমলালেবুর খোসা খাওয়া শুরু করুন। কমলালেবুর খোসা হজমের সহায়তা করে।
  • বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে কমলালেবুর খোসা খাওয়ার ফলে কোলেস্টরেল কমে যায়।
  • যাদের অতিরিক্ত মেয়াদ এবং চর্বি রয়েছে অর্থাৎ তাদের ওজন অনেক বেশি তারা জন নিয়ন্ত্রণ করতে ও পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে প্রতিদিন খাবার তালিকায় কমলা লেবুর খোসা রাখতে পারেন।
  • কমলালেবুর খোসা খাওয়ার ফলে কোলন ক্যান্সার এবং অস্টিও পরেসিস এর বিরুদ্ধে লড়াই করে।
  • গোসল করার সময় পানিতে কমলার খোসা ব্যবহার করুন এতে দেহের অনিদ্রা দূর হয়।
  • কমলালেবুর খোসা খেলে মুখের রুচি ফিরে, পাশাপাশি মুখের দুর্গন্ধ ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর হয়।
  • কমলার খোসা এজমা ও কাশির এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দায়।
  • গবেষকদের তথ্য অনুসারে কমলার খোসা খেলে সকল ধরনের ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাবে। বিশেষ করে টাইপ টু ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা পেতে কমলার খোসার ভূমিকা অপরিসীম।
  • রূপচর্চায় কমলার খোসার তুলনা নেই। এটি ত্বকের নানান রকম সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। বাজার থেকে আজেবাজে ইন না ব্যবহার করে কমলা লেবুর খোসা পেস্ট বানিয়ে তোকে এপ্লাই করেন।
প্রিয় বন্ধুগণ, গবেষকরা কমলা কে গবেষণা করে বলেছেন, কমলার কোষের রস এর চেয়েও খোসার রস এর বেশি উপকারিতা রয়েছে। এতক্ষণ আপনারা কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পড়ে আশা করি কমলার খোসা সম্পর্কে মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ অনেকটাই ধারণা পেয়ে গেছেন।

কমলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে

প্রিয় পাঠক এতক্ষণ আপনারা কমলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে এবার কমলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে আপনারা এটি সম্পর্কে জানতে চলেছেন। কমলা প্রায় সব মৌসুমী পাওয়া যায়। তবে শীতের মৌসুমে এই ফলটি আরো বেশি পাওয়া যায়। কমলা খেলে ঠান্ডা লাগে না বরং ঠান্ডা প্রতিরোধ করে।

কমলাতে নানান রকমের ভিটামিন পুষ্টিগুণ উপাদান থাকায় এই ফলটি খাওয়ার ফলে নানান রকমের রোগ প্রতিরোধ হওয়ার পাশাপাশি ঠান্ডা লাগা দূর করতে ভীষণ উপকারী। যদি কারো ঘন ঘন ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলে একটানা ঔষধ না খেয়ে কমলা খাওয়া শুরু করুন, ঠান্ডা লাগা থেকে মুক্তি পাবে।


কমলায় রয়েছে বিটাকারুটিন, তাই কমলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে না বরং ঠান্ডা প্রতিরোধ হয়। কাটি ও ভাস্কোলার সিস্টেমে দেহকে সচল ও সজাগ রাখতে কমলা লেবুর উপকারিতার তুলনা নেই। প্রিয় বন্ধুগণ এই ছিল কমলা লেবুর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

শেষ কথা

বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল কমলার জুসের উপকারিতা কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।

অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে কমলার জুসের উপকারিতা কমলার খোসা খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url