জিম করার উপকারিতা অপকারিতা - ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত
ভূমিকা
প্রতিদিনের মতো আবারো নতুন তথ্য নিয়ে এসেছি। আজকের আর্টিকেলটি মূলত জিম করার উপকারিতা অপকারিতা - ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত নিয়ে। এই আর্টিকেলে জিম করার উপকারিতা, জিম করার অপকারিতা, ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত, শরীর চর্চা করার নিয়ম, ব্যায়াম করার সঠিক বয়স, ব্যায়াম করার সঠিক সময় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
জিম বা ব্যায়াম অথবা শরীর চর্চা যাই বলেন না কেন প্রতিটি মানুষের শরীরকে সুস্থ সবল রাখে পাশাপাশি মাংসপেশী ও কোষ বৃদ্ধি পায় এবং শক্তি বাড়ায়। প্রতিটি মানুষ একদিন হলেও নানান রকমের ব্যায়াম করে থাকেন। শরীর চর্চার জন্য জিম বা ব্যায়াম সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জানতে সীম আইটি ওয়েবসাইটের নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
জিম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
জিম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করলে, দেখা যায় যে জিমে ব্যায়াম করা অনেক স্বাস্থ্য উপকারে আসতে পারে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এটি বিপদজনক হতে পারে। এখানে কিছু মূল জিম করার উপকারিতা ও অপকারিতা তুলে ধরা হলো।
জিম করলে শারীরিক সুস্থতা, মানসিক সুস্থতা, সামগ্রিক টেনশন, জীবনযাত্রা উন্নতি, দীর্ঘ মেয়াদী স্বাস্থ্য সুবিধা পাওয়া যায়। এইগুলো উপকারিতার পাশাপাশি জিম করা ব্যক্তিদের কিছু উপকারিতা যেমন। আঘাতের ঝুঁকি, মেন্টাল চাপ, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস, খাবার সংক্রান্ত সমস্যা, শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। জিম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ব্যাখ্যা নিচে তুলে ধরা হলো।
জিম করার উপকারিতা
জিম করার উপকারিতা বিস্তত এবং এটি শরীরের পাশাপাশি মনের জন্য বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এখানে জিম করার প্রধান কিছু উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো।
ওজন কমে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ঘামের মাধ্যমে লোমের গোড়া দিয়ে বেরিয়ে যায় ফলে ওজন কমে।
মাসল টোনিং নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেশীর শক্তি ও কোষ অর্থাৎ টোন বাড়ানো যায়।
হার্ট সুস্থ থাকে কুস্কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম শক্তিশালী হয়, যার ফলে হার্ট সুস্থ ও ভালো থাকে।
হাড় মজবুত ওজন বহনকারী ব্যায়াম পাহাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়তা করে, যা অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমায়।
স্ট্রেস কমায় ব্যায়াম স্ট্রেস হরমোন কমায় এবং মেজাজ উন্নতি করে।
শক্তি বৃদ্ধি শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং দৈনন্দিন কার্যক্রমে সহজে পারদর্শী হওয়া যায়।
মনোযোগ বৃদ্ধি শারীর িক ফিটনেস মস্তিষ্কের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং মনোযোগ বাড়ায়।
ঘুমের উন্নতি ব্যায়াম ভালো ঘুমের সহায়তা করে।
এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি শরীরের শক্তি ও উৎসাহ বৃদ্ধি পায়।
লাইফস্প্যান বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়মিত ব্যায়াম দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যবান জীবনযাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং অসুস্থতার ঝুঁকি কমায়।
জিম করার অপকারিতা
জিম করার সময় কিছু অপকারিতা হতে পারে, বিশেষ করে যদি ব্যায়াম না করা হয় সঠিকভাবে বা অতিরিক্ত ভাবে করা হয়। এখানে জমি করার কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো।
পেশী স্ট্রেইন ও ইনজুরি ভুল ভাবে ব্যায়াম করলে বা অতিরিক্ত ভার উত্তোলনের কারণে পেশীতে টান, স্ট্রেইন বা ইনজুরি হতে পারে।
জয়েন্ট সমস্যা জয়েন্টে অতিরিক্ত চাপ বা ভুল ফর্মে ব্যায়াম করলে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন হাঁটু বা কাঁধের সমস্যা।
শারীরিক ক্লান্তি অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে শরীরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে, ফলে ক্লান্তি ও দুর্বলতা বৃদ্ধি পায়।
মানসিক চাপ ওভারট্রেনিং মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কিছু লোক ব্যায়াম করার পর অতিরিক্ত খা খাবার খেয়ে ফেলে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
হরমনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন অতিরিক্ত ব্যায়ামের ফলে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে, ফলে শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
হার্টের সমস্যা কিছু ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম হার্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত
ব্যায়াম করার পর কি খাবেন তা নির্ভর করে আপনার লক্ষ্য যেমন, পেশি বৃদ্ধি, ওজন কমানো, সাধারণ স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং ব্যায়ামের ধরন ও তীব্রতার উপর। সাধারণভাবে, ব্যায়ামের পর খাবার গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শরীরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া তরান্বিত করে, বেশি মেরামত এবং শক্তি পুনরুদ্ধার করা। নিচে কিছু সুপারিশত খাবার এবং খাদ্য পদার্থকে তুলে ধরা হলো।
প্রোটিন যুক্ত খাবার
চিকেন বা মুরগির মাংস, ফিস ( বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ হলে আরো ভালো হয়), ডাল ও ছোলার ভাজা
কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার
ব্রাউন রাইস বা কুইনোয়া ও ওটমিল।
ফ্যাট যুক্ত খাবার
আবাকাডো, বাদাম ও বীজ।
ফল ও সবজি
কলা, স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, ব্রকলি, স্পিনাচ।
হাইড্রেশন যুক্ত খাবার
পানি, কোকোনাট জল।
পরামর্শ
বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুসারে ব্যায়াম করার ৩০ থেকে ৬০ মিনিট এর মধ্যে খাবার গ্রহণ করতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। প্রিয় পাঠক ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে আপনারা মোটামুটি ভালো ধারণা পেয়েছেন।
শরীর চর্চা করার নিয়ম
শরীরচর্চা পাবেন করার নিয়ম ও পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়। এখানে কিছু মূল নির্দেশনা দেওয়া হলো, যা শরীর চর্চার জন্য উপকারী হতে পারে।
লক্ষণ নির্ধারণ করুন শরীর চর্চা করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য উন্নতি, ওজন কমানো মাসল বিল্ডিং এই তিনটি জিনিস এর ওপর লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।
ওয়ার্ম আপ শরীরচর্চা শুরুর আগে ৫ থেকে ১০ মিনিট ওয়ার্ম আপ করুন। এটি আপনার পেশী এবং জয়েন্ট গুলিকে প্রশস্ত করবে এবং চোটের ঝুকি কমাবে।
রেগুলার এক্সারাসাইজ নিয়মিত ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ। সপ্তাহে অন্তত ৩ থেকে ৪ দিন এক্সারসাইজ করার চেষ্টা করুন।
বিভিন্ন ধরনের এক্সারসাইজ যেমন দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, ওয়েট লিফটিং, ফ্লেক্সিবিলিটি এক্সারসাইজ, যোগাসন সমস্ত কিছু মিলিয়ে শরীর চর্চা করে।
প্রতিরোধমূলক টেকনিক শরীরের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং পুনরুদ্ধার সময়ে নিশ্চিত করুন। ব্যায়াম করার পর পেশি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রদত্ত সময় দিন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন ব্যায়াম করার সময় শরীর ঘামে এবং পানি ঝরায়। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
পুষ্টিকর খাদ্য স্বার্থপর খাবার খাওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখুন। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, এবং ভিটামিন মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে।
ধৈর্য ধরুন শরীর চর্চার ফলাফল একদিন আসে না। ধৈর্য ধারণ করুন এবং নিয়মিতভাবে পরিশ্রম করুন।
পর্যবেক্ষণ করুন আপনার অগ্রগতি মনিটর করুন এবং পর্যবেক্ষণ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনুন।
ব্যায়াম করার সঠিক বয়স
ব্যায়াম করার সঠিক বয়স বলতে কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা সম্ভব নয়, কারণ এটি ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। তবে সাধারণভাবে বলতে গেলে, ব্যায়াম শিশুদের থেকে শুরু করে বয়স্কদের এমনকি সকলের জন্য উপকারী।
শিশুদের জন্য
৩ থেকে ৫ বছর বয়সী এরকম শিশুদের মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য খেলাধুলা ও সহজ ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ। ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী বাচ্চাদের মাংস বেশী শক্তিশালী করার জন্য এবং স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য নিয়মিত ব্যায়াম প্রয়োজন। যেমন, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, এবং অন্যান্য শারীরিক কার্যকলাপ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য
১৮ থেকে ৬৫ এই সময় নিয়মিত ব্যায়াম স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অপরিহার্য। এই সময়কালে হৃদরোগ, স্থূলতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক।
বয়স্কদের জন্য
বয়স ৬৫ বৎসর বা তার বেশি এই সময় ব্যায়াম সংঘাত ও ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি বৃদ্ধাদের মানসিক সুস্থতা ও চলাচলের সক্ষমতা ও উন্নত করে।
প্রিয় পাঠক, যেকোনো বয়সেই ব্যায়াম করা ভালো, তবে নির্দিষ্ট কোন প্রোগ্রাম শুরু করার আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। বিশেষ করে যদি কোন স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে।
ব্যায়াম করার সঠিক সময়
ব্যায়াম করার সঠিক সময় আপনার ব্যক্তিগত রুটিন, লক্ষ্য এবং শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। তবে, বিভিন্ন সময়ে ব্যায়ামর উপকারিতা রয়েছে। তবে ব্যায়াম করার সঠিক সময় হলো সকালে। ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ব্যায়াম করা যায়। তবে খালি পেটে ভারী ব্যায়াম না করাই ভালো। সকালের হালকা নাস্তা করার পর ভারী ব্যায়াম করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ঘুম থেকে ওঠার ৬ ঘন্টা পর অর্থাৎ দুপুরে এই সময় শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি থাকে ফলে দুপুরে ব্যায়াম করলে পেশির নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি বিকেল এবং সন্ধ্যা জন্য শক্তি সরবরাহ করে। রাতে ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে ব্যায়াম করলে অধিকাংশ মানুষেরই ঘুমের সমস্যা অনুভব হয়।
শেষ কথা
বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ছিল জিম করার উপকারিতা অপকারিতা - ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে জিম করার উপকারিতা অপকারিতা - ব্যায়াম করার পর কি খাওয়া উচিত এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url