বৃষ্টির পানি কি খাওয়া যায় উপকারিতা অপকারিতা কি উপাদান থাকে

ভূমিকা

আজকের আর্টিকেলটি মূলত বৃষ্টির পানি কি খাওয়া যায় উপকারিতা অপকারিতা কি উপাদান থাকে নিয়ে। এই আর্টিকেলে বৃষ্টির পানি কি খাওয়া যায়, বৃষ্টির পানির উপকারিতা, বৃষ্টির পানির অপকারিতা, বৃষ্টির পানিতে কি কি উপাদান থাকে, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ পদ্ধতি, বৃষ্টির পানিতে কোন এসিড থাকে, বৃষ্টির পানিতে কোন ভিটামিন থাকে সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বৃষ্টির পানি কি খাওয়া যায় উপকারিতা অপকারিতা কি উপাদান থাকে

বৃষ্টি হল সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আকাশ থেকে পানি মাটিতে লিপিত হয়। এটি বায়ুমণ্ডলের জলবাষ্পের কণার ঘনত্ব বৃদ্ধি এবং কণাগুলির একত্রিত হওয়ার ফলে ঘটে। বৃষ্টির সম্পর্কে নানান রকমের তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। বৃষ্টি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জানতে হলে সীমা আইটি ওয়েবসাইট এর সঙ্গে থেকে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

বৃষ্টির পানি কি খাওয়া যায়

অস্ট্রেলিয়ার একটি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বৃষ্টির পানি পৃথিবীর সবচেয়ে বিশুদ্ধ পানি। বৃষ্টির পানি পান করার সবচেয়ে নিরাপদ। বৃষ্টির পানিতে মাটি বা পাথরের কচি কোনটাই থাকে না। আবার বিজ্ঞানীরা এটাও বলেছেন, বৃষ্টির পানি পরে সাধারণত পরিবেশের ধুলা, পলিউশন এবং অন্যান্য কণার সাথে মিশে যায়।

বিশেষ করে শহর অঞ্চলে বা শিল্প কলকারখানার কাছাকাছি এলাকায় বৃষ্টির পানি দূষিত হতে পারে। যদি বৃষ্টির পানি খাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তবে তা সঠিকভাবে ফিল্টার করে নেওয়া উচিত। এক কথায়, বৃষ্টির পানি খাওয়ার আগে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।

বৃষ্টির পানির উপকারিতা

প্রিয় পাঠক অনেকেই জানে না, বৃষ্টির পানির উপকারিতা সম্পর্কে। নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন তাহলে আপনারা বৃষ্টির পানির উপকারিতা সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারবেন।

বৃষ্টির পানিতে অ্যালকালাইন উপাদান রয়েছে। এই অ্যালকালাইন উপাদান মানব দেহের পেটের এসিডিটি কমায়, হজম শক্তি বাড়ায়, পিএইচ এর মত মরণব্যাধি ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় পাশাপাশি বৃষ্টির পানি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এর মত কাজ করে মানব দেহের ত্বক, হাতের নখ, মাথার চুল, দৃষ্টিশক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

গবেষকরা বলেছেন একজন ব্যক্তির প্রতিদিন দিনে সংরক্ষণ ও ফিল্টারিং করা ২ থেকে ৩ চামচ বৃষ্টির পানি খেতে। এই সকল স্বাস্থ্য উপকারিতার পাশাপাশি বৃষ্টির পানি আরো বিশেষ কিছু উপকারিতা রয়েছে, নিচে তার তুলে ধরা হলো।

প্রাকৃতিক এবং সস্তা

বৃষ্টির পানি প্রাকৃতিকভাবে জমা হয় এবং এটি সাধারণত কোন খরচ ছাড়াই পাওয়া যায়। এই প্রাণীর জন্য কোন বিদ্যুৎ বা অন্য কিছুর খরচ করতে হয় না।

পরিবেশ সংরক্ষণ

বৃষ্টির পানি ক্ষণ সংগ্রহ করে ব্যবহার করলে ভূগর্ভস্থ জল স্তর পুনরুদ্ধার হয় এবং পানি সংরক্ষণ হয়, যা পরিবেশের জন্য উপকারী।

মাটি ও কৃষির জন্য উপকারী

বৃষ্টির পানি মাটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মাটির আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান মাটিতে সরবরাহ করে। কৃষির জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা

বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও ব্যবহার করে মূল প্রাণী উৎসের উপর চাপ কমানো যায়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।

অতিরিক্ত পানি ব্যবহার

বৃষ্টির পানি রান্না, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা গার্ডেনিং ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যা প্রধান প্রাণীর উৎসের ওপর চাপ কমিয়ে দেয়।

সুস্থতার জন্য উপকারী

কিছু গবেষণায় বলেছে যে, বৃষ্টির পানি কিছু নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যের উপকারিতা প্রদাহ কমাতে পারে। যেমন উচ্চমানের অক্সিজেন এবং কম রাসায়নিক উপাদান।

বৃষ্টির পানির অপকারিতা

বৃষ্টির পানির অপকারিতা এই প্রসঙ্গে প্রথমে আমি আপনাদের বলব,

অ্যসিড বৃষ্টি

বায়ুতে থাকা সালফার ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড বৃষ্টির পানিতে মিশে অ্যাসিড বৃষ্টি তৈরি করতে পারে। অ্যাসিড বৃষ্টি আমাদের জন্য ভীষণ অপকারী।

মাটি দূষণ

মাটিতে থাকা রাসায়নিক সার, কীটনাশক এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ বৃষ্টির পানিতে মিশে যেতে পারে।

জৈব দূষণ

জীবাণু, তাহেরাস এবং পরজীবী বৃষ্টির পানিতে মিশে যেতে পারে।

দূষণ

বৃষ্টির পানি যখন পড়তে শুরু করে, বায়ুতে থাকা ধূলা, ধোঁয়া এবং অন্যান্য দূষিত কণা সংগ্রহ করে শহর বা শিল্প এলাকায় এটি দূষণ আরো বেশি হতে পারে। জাপানের গুণগতমানকে প্রভাবিত করতে পারে।

ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস

বৃষ্টির পানি জমা হয়ে থাকলে এটি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য ক্ষতিকর মাইক্রো অর্গানিজম দ্বারা দূষিত হতে পারে। বিশেষ করে যদি এটি বহিষ্কার না থাকে।

জীবাণু ও পোকামাকড়

বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে এটি পোকামাকড় বিশেষ করে মশা, প্রজননের জায়গা হতে পারে। এটি স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

পানি রক্ষণাবেক্ষণ

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহার করার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। যদি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা পরিষ্কার না থাকে, তাহলে পানি দ্রুত অযোগ্য হয়ে যেতে পারে।

রাসায়নিক দূষণ

বিশেষ করে শিল্প বা শহর এলাকায়, বৃষ্টির পানি বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমন গ্যাস নির্গমনের ফলে দূষিত হতে পারে।

প্রিয় পাঠক, এই অপকারিতা গুলি উপশম করার জন্য, বৃষ্টির পানি ব্যবহার করার আগে সঠিকভাবে ফিল্টার ও পরিশোধন করা উচিত এবং সংগ্রহের ব্যবস্থা পরিষ্কার থাকতে হবে।

বৃষ্টির পানিতে কি কি উপাদান থাকে

বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে যা তার উৎস এবং পরিবেশর উপর নির্ভর করে। বৃষ্টির পানিতে অ্যালকাইন নামক উপাদান সবচাইতে বেশি পাওয়া যায়। সাধারণত, বৃষ্টির পানিতে যে উপাদানগুলো পাওয়া যায় সেগুলি নিচে তুলে ধরা হলো।

জলীয় বাষ্প বৃষ্টির পানির প্রধান উপাদান।

বিভিন্ন আণবিক গ্যাস যেমন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড।

খুনিজ পদার্থ যেমন, সল্ট, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি।

অম্লীয় উপাদান যেমন, আলফার ডাইঅক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড, যা বৃষ্টির পানিকে কখনো কখনো অম্লীয় এসিডিক করে তুলতে পারে।

ধূলিকণিকা বায়ুর মাধ্যমে সঞ্চারিত ধূলিকণিকা, যা বৃষ্টির পানিতে পড়ে যেতে পারে।

জৈব পদার্থ যেমন, মাটি, পাতা, উদ্ভিদ বা প্রাণীজ ভগ্ণাংশ।

কীটনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ কিছু এলাকায়, শিল্পজাত বা নিষেধাজ রাসানিক পদার্থও বৃষ্টির পানিতে মিশতে পারে।

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ পদ্ধতি

বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশ বান্ধব পদক্ষেপ বা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহায়তা করে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ করে। এখানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করার কিছু পদ্ধতি নিচে তুলে ধরা হলো
  • রেইন ব্যারেল Rain Barrel
  • রেইন ট্যাঙ্ক Rain Tank
  • পেরকুলেশন পিট Percolation pit
  • গ্রেডেড মিল্টার Grader Filter
  • গ্রীন রুফ Green Roof
  • সুইজিং সিস্টেম Swales
এই সমস্ত জিনিস ব্যবহার করে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা যাবে।

বৃষ্টির পানিতে কোন এসিড থাকে

বৃষ্টির পানিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিড থাকে, যা মূলত বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের প্রতিক্রিয়ার ফলে তৈরি হয়। এই এসিড গুলোর মধ্যে প্রধান প্রধান এসিড নিচে তুলে দেওয়া হলো।

কার্বনিক এসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক এসিড, অ্যামোনিয়াম আয়ন ইত্যাদি। তবে বৃষ্টির পানি নাইট্রোজেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। এবং বৃষ্টির পানিতে সবচাইতে বেশি অ্যালকালাইন উপাদান রয়েছে।

বৃষ্টির পানিতে কোন ভিটামিন থাকে

বৃষ্টির পানিতে সাধারণভাবে কোন নির্দিষ্ট ভিটামিন থাকে না। বৃষ্টির পানি মূলত থেকে পতিত জল বাষ্পের কারণে তৈরি হয় এটি বিভিন্ন পরিবেশগত উপাদান, ধূলিকণা, এবং সম্ভবত কিছু ক্ষুদ্র পুষ্টি উপাদান ধারণ করতে পারে। তবে ভিটামিনের পরিমাণ খুবই নগণ্য এবং এ ধরনের কোন নির্দিষ্ট ভিটামিন এর উপস্থিতি নিশ্চিত নয়।

ভিটামিন সাধারণত খাদ্য পদার্থে পাওয়া যায়, যেমন ফলমূল, সবজি, দুধ, এবং মাংসে। তাই ভিটামিনের জন্য সুষম খাদ্যাভাসের বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তবে বৃষ্টির পানিতে বৃষ্টির পানিতে অ্যালকালাইন উপাদান রয়েছে।

শেষ কথা

বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি বৃষ্টির পানি কি খাওয়া যায় উপকারিতা অপকারিতা কি উপাদান থাকে এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।

অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।

শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে বৃষ্টির পানি কি খাওয়া যায় উপকারিতা অপকারিতা কি উপাদান থাকে এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url