ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয় - গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
ভূমিকা
আজকে আর্টিকেলটি মূলত, ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয় - গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় নিয়ে। এই আর্টিকেলে ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয়, গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়, গলা ব্যথা হলে কি খাওয়া উচিত, ঠান্ডায় গলা ব্যথা হলে করণীয়, দ্রুত গলা ব্যাথা কমানোর ওষুধ, গলা ব্যথার ট্যাবলেট এর নাম বাংলাদেশ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
গলা ব্যথা, এটি সাধারণ একটি সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে কমবেশি অনেকেরই মাঝেমধ্যে হয়ে থাকে। সাধারণত ঠান্ডা লাগা, সর্দি বা গলা সংক্রমণের জন্য হয়। আপনার গলা ব্যথা যদি গুরুতর হয় তাহলে ডাক্তারের পড়াশোনা উচিত। প্রিয় পাঠক গলা ব্যথা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি। জানতে হলে নিচের লেখাগুলো পড়তে থাকুন।
ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয়
ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয়? বিস্তারিত জানতে হলে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
গলার সংক্রমণ গলা বা এলার্জির কারণে সর্দি, ফ্লু, থ্রোটের কারণে গলার অভ্যন্তরীণ অংশে প্রদাহ হতে পারে, ফলে ঢোক গিলতে ব্যথা সৃষ্টি করে।
সর্দি কাশি সর্দি কাশি বা ভাইরাল সংক্রমনের কারণে গলা প্রদাহ হতে পারে। অনেক সময় সর্দি-কাশির কারণে গলা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
টনসিলাইটিস টনসিল বা গলার আমাশায় সংক্রমনের কারণে গলা ব্যথা হয়। এতে গলা ফুলে যায় এবং ঢোক গিলতে কষ্ট হয়।
এলার্জি ধুলা, পোলেন, বা জলপাই কিছু কিছু খাবারের কারণে গলা ফুলে যেতে পারে এবং গলায় এলার্জি হয়ে ব্যথা অনুভব হতে পারে।
মুখের ক্যাভিটির মুখের ভিতরে যে কোন সমস্যা যেমন দাঁতের সংক্রমণ বা মুখের আলসার এর কারণে গলা ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।
উচ্চস্বরে কথা বলা চিৎকার করে উচ্চস্বরে কথা বললে গলার পেশী ক্লান্ত হয়ে পড়ে ফলে গলা ব্যথা হয়।
গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
গলা ব্যথা কমানোর কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা আপনাকে আরাম দিতে সাহায্য করতে পারে। নিচে গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
গরম পানির গার্গল গরম পানির সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে দিয়ে কয়েকবার গার্গল গলা শান্ত হয়ে পড়ে এবং প্রদাহ কমতে পারে।
হলুদ ও দুধ এক গ্লাস গরম দুধে এক চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে পান করুন। হলুদে আন্টি ইনফ্লেমেটরি গুণাগুণ থাকে, যা গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
মধু ও লেবু এক চামচ মধুর সাথে কিছু টক লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে গলা শান্ত হয় এবং ব্যথা কমতে শুরু করে।
আদা চা আদা চা গলা ব্যথা কমানোর জন্য খুবই কার্যকর। আদা চায়ের মধ্যে মধু ও লেবুর রস যোগ করতে পারেন।
বাষ্প নেওয়া গরম পানির বাষ্প শ্বাসে নেওয়া গলা ও নাসারন্ধ্রেরা প্রদাহ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
পানি পান করা পর্যাপ্ত পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি গলা ভিজিয়ে রাখতে এবং আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
বদহজম প্রতিরোধ অম্লতা বা বদ হজমের কারণে গলা ব্যথা হতে পারে, তাই ভারী ও তীব্র খাবার পরিহার করুন।
গরম কমপ্রেস গলার ওপর গরম কমপ্রেস বা গরম টাওয়াল দিয়ে হালকা চাপ দিতে পারেন।
যদি আপনার গলা ব্যথা বেশিদিন ধরে থাকে বা এর সাথে জ্বর, কাশি বা অন্যান্য কোন গুরুতর উপসর্গ থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গলা ব্যথা হলে কি খাওয়া উচিত
গলা ব্যথা হলে আপনার খাবার নির্বাচনে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, যা আপনাকে আরাম দিতে এবং দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করতে পারে। গলা ব্যথা হলে কি খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে নিচে কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হলো।
নরম ও সুমিষ্ট খাবার মসলা মুক্ত, নরম ও সুমিষ্ট খাবার যেমন, স্মুথি, পিউরি করা ফলমূল, ওটস বা জোয়ারের পায়েস খেতে পারেন। এগুলি খাবার গলার উপর কম চাপ সৃষ্টি করে।
সুপ বা স্টক হালকা মাংসের স্টক বা সবজি স্যুপ গলা শান্ত রাখতে এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।
গরম পানি গরম চা যেমন আদা চা বা ক্যামোমাইল চা গলা শান্ত করতে পারে। তবে অতিরিক্ত গরম পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত।
মধু মধু গলা ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। এক চামিচ মধু খেতে পারেন, অথবা এটি গরম পানিতে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
পানি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি গলা আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে এবং গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
সুখী খাবার স্যালাড, আভোকাডো, এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার যা কলা ঝলসে না এবং সহজে হজম হয়।
এইগুলো খাবারের পাশাপাশি কিছু খাবার এবং পানীয় রয়েছে যা কলা ব্যথার জন্য উপযুক্ত নয় বা এড়িয়ে চলা উচিত। যেমন,
মসলাদার খাবার অতিরিক্ত মসলাদার ও ঝাল খাবার গলা ব্যথা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
শীতল বা এসিডিক খাবার ঠান্ডা বা এসিডিক খাবার যেমন টক ফল গলা আরো খারাপ করতে পারে।
ক্ষুধার্ত বা খারাপ খাবার খুব শুষ্ক বা খাঁটি খাবার গলা ব্যথা বাড়াতে পারে।
প্রিয় পাঠক, আপনার যদি বলা ব্যাথার সাথে অন্য কোন গুরুতর সমস্যা রয়েছে বা এটি দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ঠান্ডায় গলা ব্যথা হলে করণীয়
ঠান্ডায় গলা ব্যথার জন্য কিছু সহজ প্রতিকার আছে যা আপনি বাড়িতে করতে পারেন। নিচে তা তুলে ধরা হলো।
গরম জল পান করুন
গরম জল গলা নরম করতে সাহায্য করে এবং গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
গার্গল করুন
গরম নুনের জল দিয়ে গার্গল করলে গলার ইনফেকশন কমে এবং ব্যথা কিছুটা উপশম হতে পারে। এক গ্লাস গরম জলে এক চা চামচ নুন মিশিয়ে গার্গল করুন।
হালকা খাবার খান
ঠান্ডা, তেলেভাজা বা অত্যন্ত মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। দুধ, ওটস, স্যুপ, ইত্যাদি হালকা খাবার খান।
উষ্ণ বাষ্প নিন
গরম পানির বাষ্প শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য উপকারী হতে পারে। বাষ্প নিতে একটি বাটি গরম জল দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন।
মধু ও আদা
মধু ও আদা একসঙ্গে গরম পানিতে মিশিয়ে পান করলে গলা ব্যথা কমানোর সাহায্য করতে পারে।
বিশ্রাম
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গলার উপর চাপ না দেওয়ার জন্য বেশি কথা বলবেন না।
হালকা ঔষধ
অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বা পাইন রিলিফ ট্যাবলেট যেমন পারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন ব্যবহার করতে পারেন, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
যদি গলা ব্যথা বেশ কয়েকদিন ধরে চলতে থাকে, বা অন্য কোন গুরুতর লক্ষণ যেমন উচ্চ তাপমাত্রা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, বা গলা ফোলা ভাব দেখা দেয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
দ্রুত গলা ব্যাথা কমানোর ওষুধ
গলা ব্যথা দ্রুত কমানোর জন্য কিছু সাধারণ ঔষধ রয়েছে যা আপনি ব্যাপার করতে পারেন। নিচে দ্রুত গলা ব্যাথা কমানোর ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
প্যারাসিটামল (Paracetamol) এই ওষুধটি গলা ব্যথা কমাতে ও তীব্রতা হালকা করতে পাশাপাশি ব্যথা এবং জ্বর কমাতে সাহায্য করে.
আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen) এটি একটি এন্টি ইনফ্লামেটরি ঔষধ যা গলা ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- থ্রোট স্প্রে Throat Spray
- লাক্সেসিডিন Loxecidine
- মেডিকেটড লজেজ্ঞ Medicated Lozenges
- স্ট্রেপসিলস Strepsils
- ভিক্স Vicks
এইগুলো ওষুধ গলা ব্যথা ও অস্বস্তি দ্রুত উপশম করতে সাহায্য করে পাশাপাশি গলা ঠান্ডা রাখে। এই ওষুধগুলি ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ও সঠিক দোষ সম্পর্কে পরামর্শ পেতে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। বিশেষ করে যদি আপনার অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে বা আপনি অন্যান্য ঔষধ গ্রহণ করছেন।
গলা ব্যথার ট্যাবলেট এর নাম বাংলাদেশ
বাংলাদেশে গলা ব্যথার জন্য ব্যবহৃত কিছু সাধারণ ট্যাবলেটের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো।
প্যারাসিটামল (Paracetamol) এই ওষুধটি ব্যথা ও জ্বর কমাতে ব্যবহৃত হয়।
আইবুপ্রোফেন (Ibuprofen) এটি একটি এন্টি ইনফ্লামেটরি ঔষধ যা গলা ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
লক্সেসিডিন (Loxecidine) এই ঔষধটি গলা ব্যাথার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে।
স্ট্রেপসিলস (Strepsils) এই ঔষধ, গলা ব্যথা ও ঠান্ডা সর্দি উপশমে ব্যবহৃত।
ব্রস্কাসিন (Broncasin) এই ঔষধ, কাশি ও গলা ব্যথার জন্য ব্যবহৃত হয়।
প্রিয় পাঠক, এই ট্যাবলেট গুলি ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডোজ এবং সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শেষ কথা
বন্ধুগণ, শেষ কথাই আজকে আমার এই আর্টিকেলটি ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয় - গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এই সকল তথ্য আশা করি আপনি এই আর্টিকেলে সঠিক তথ্য খুঁজে পেয়েছেন। কোনো কিছু বুঝতে না পারলে বা কোনো তথ্য জানার থাকলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
অনলাইন জগতে সীমা আইটির অবদান হবে অপরিসীম, এই প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে আপনার পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবীর কাছে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
শেষ কথা আপনাদের যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে আমাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। এতক্ষণ আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থেকে ঢোক গিলতে গলা ব্যথা কেন হয় - গলা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এর সমস্ত তথ্য পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন এরকম নতুন নতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url