পিরিয়ডের সময় কি খাওয়া উচিত না
পিরিয়ডের সময় কি খাওয়া উচিত না
পিরিয়ডের সময় খাদ্যাভ্যাস এর উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সেই প্রেক্ষিতে পিরিয়ডের সময় কি খাওয়া উচিত না এবং কি খাওয়া উচিত তা জানতে পারবেন এই আর্টিকেলে। নিচের লেখাগুলো ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন, আশা করি পিরিয়ডের সময় কি খাওয়া উচিত না এবং কি কি খাওয়া উচিত তা সম্পূর্ণ ধারণা পেয়ে যাবেন।
পিরিয়ডের সময় কি খাওয়া উচিত না? পিরিয়ডের সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পিরিয়ডের যন্ত্রণাকে কমাতে এবং শরীরের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। পিরিয়ডের সময় কিছু খাবার থেকে বিরত থাকা উচিত, এবং কিছু খাবার গ্রহণ করা উচিত। পিরিয়ডের সময় কি খাওয়া উচিত না এবং কি কি খাওয়া উচিত তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
পিরিয়ডের সময় যেগুলি খাওয়া উচিত
- অতিরিক্ত লবণ পানি ধারণের সমস্যা বাড়িয়ে গ্যাস বা bloating (ফুলে যাওয়া) সৃষ্টি করতে পারে, যা পিরিয়ডের সময়ে অস্বস্তি বাড়ায়।
- কফি, চা বা চকলেটের মধ্যে ক্যাফেইন থাকে, যা শরীরে জলশূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে এবং মাসিক ব্যথা (ক্র্যাম্পস) বাড়াতে পারে। ক্যাফেইন অ্যাংজাইটি এবং ঘুমের সমস্যা বাড়াতে পারে।
- অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার পেটের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং গ্যাস, অস্বস্তি ও bloating বাড়াতে পারে।
- পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত চিনি শরীরে শর্করার স্তর বাড়িয়ে রক্তে ইনসুলিনের অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি করতে পারে, যা PMS (পিরিয়ড পিএমএস) লক্ষণকে তীব্র করতে পারে।
- অ্যালকোহল শরীরের হরমোনাল ব্যালান্সকে প্রভাবিত করতে পারে এবং মাসিকের ব্যথা ও অস্বস্তি বাড়াতে পারে। এটি ডিহাইড্রেশনও সৃষ্টি করতে পারে।
- গ্যাস-উৎপন্ন খাবার যেমন শিম, কলা, ব্রোকলি, কোল্ড ড্রিঙ্কস ইত্যাদি, যেগুলি পেটে গ্যাস বা ফুলে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- মাংসের কিছু ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন সসেজ, হটডগ, এই ধরনের খাবারে অতিরিক্ত লবণ ও চর্বি থাকে, যা পিরিয়ডের সময়ে শরীরের জন্য ভাল নয়।
পিরিয়ডের সময় যেগুলি খাওয়া উচিত না
পিরিয়ডের সময় কিছু বিশেষ খাবার খাওয়া উচিত যা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে, মাসিকের ব্যথা কমায় এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে। নিচে কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা পিরিয়ডের সময়ে খাওয়া উচিত।
- পিরিয়ডের সময় রক্তস্রাবের কারণে আয়রনের অভাব হতে পারে, তাই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যেমন পালং শাক, মটরশুঁটি, ডাল, গরুর মাংস, মুরগির মাংস, মাছ, শুকনো খেজুর, তিল ইত্যাদি।
- ক্যালসিয়াম মাসিকের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক। যেমন দুধ, দই, পনির, ব্রকলি, পালং শাক, সয়াবিন ইত্যাদি।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং মাসিকের ব্যথা ও অস্বস্তি হালকা করতে পারে। যেমন মাছ (বিশেষত স্যালমন, ম্যাকরেল), আখরোট, চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড ইত্যাদি।
- পিরিয়ডের সময় পেটের সমস্যা (যেমন constipation) থেকে মুক্ত থাকতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ফলমূল (আপেল, কমলা, পেয়ার), সবজি (ব্রকলি, গাজর, কুমড়া), ডাল, শসা, শসা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।
- ভিটামিন B6 PMS (পিরিয়ডের আগে সিনড্রোম) এবং মাসিকের সময় অবসাদ বা অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে। যেমন কলা, আলু, মুরগির মাংস, মাছ, আখরোট, সয়াবিন ইত্যাদি।
- ম্যাগনেসিয়াম মাসিকের ব্যথা কমাতে এবং শরীরকে শিথিল করতে সাহায্য করে। যেমন বাদাম, শসা, পালং শাক, ডার্ক চকলেট (70% বা তার বেশি কোকো কন্টেন্ট), বীট, সয়াবিন ইত্যাদি।
- পিরিয়ডের সময় শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখা জরুরি। প্রচুর পানি, স্যুপ, তাজা ফলের রস এবং হার্বাল চা (যেমন ক্যামোমিল বা মেন্থল চা) পান করতে পারেন।
- ক্যামোমিল চা বা মেন্থল চা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে এবং শরীরকে শিথিল রাখতে সাহায্য করে।
এই ধরনের খাবার খেয়ে পিরিয়ডের সময় শরীরের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা যায় এবং মাসিকের অস্বস্তি ও ব্যথা অনেকটাই কমানো যায়। বন্ধুগণ পিরিয়ডের সময় কি খাওয়া উচিত না এবং কি কি খাওয়া উচিত আশা করি ইতিমধ্যে উপরের অংশটুকু পড়ে আপনারা সঠিক ধারনা পেয়ে গিয়েছেন।
লেখকের মন্তব্য
সীমা আইটি ওয়েবসাইট এর প্রকাশিত পিরিয়ডের সময় কি খাওয়া উচিত না তা সম্পর্কে আপনার কোন মতামত থেকে থাকলে তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। প্রিয় পাঠক আপনার যদি কোন বিশেষ তথ্য জানার থাকে তাহলে সীমা আইটি ওয়েবসাইট এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।
এইরকম অজানা তথ্য প্রতিদিন সবার আগে জানতে সীমা আইটি ওয়েবসাইট ফলো করে সাথে থাকুন। জনসচেতনা তার ক্ষেত্রে আপনার পরিচিত ব্যক্তি যেমন বন্ধু বান্ধবী, পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের কাছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই আর্টিকেল টি শেয়ার করে দিতে পারে। শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url